বরগুনার বেতাগী উপজেলায় প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে আশ্রয় নেওয়া বৃদ্ধ মকবুল হাওলাদার (৭৫) অবশেষে পাকা ঘর পেলেন। বেতাগী পৌর মেয়রের ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত হয় মকবুলের ঘর। এ ঘরেই মেয়েকে নিয়ে থাকবেন তিনি।

শুক্রবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১২টায় মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে মকবুলের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহআলম হাওলাদারসহ স্থানীয় গণ্যমান্যরা। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বৃদ্ধ মকবুল।

মকবুল হাওলাদারের বাড়ি বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জিলবুনিয়া গ্রামে। তিনি প্রতিবেশী খালেক হাওলাদারের গোয়ালঘরে ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট বছর আগে মকবুল হাওলাদারের স্ত্রী মারা যান। তখন তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়ে মীমের বয়স ছিল পাঁচ বছর। তখন থেকেই তিনি মেয়েকে নিয়ে খুপরি ঘরে বসবাস করতেন। তবে গত বছরের ডিসেম্বরে ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ের কবলে পড়ে খুপরি ঘরটি ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। এ সময় মকবুল মেয়েকে নিয়ে প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে আশ্রয় নেন।

বৃদ্ধর গোয়ালঘরে থাকার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন মহল থেকে তার পুনর্বাসনের দাবি তোলে। পরে বিষয়টি বেতাগীর পৌর মেয়র এ বি এম গোলাম কবিরের নজরে এলে তিনি বৃদ্ধকে পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

মকবুল হাওলাদার বলেন, আমি জীবনেও কল্পনাও করিনাই যে আমিও পাকা ঘরে থাকমু। মেয়র সাব আমারে গরুঘর (গোয়ালঘর) থেইকা আইন্না পাকা ঘর দেছে। আমি আমার মাইয়া লইয়া এহন শান্তিকে থাকতে পারমু। মেয়র সাবের জন্য প্রাণ ভইরা দোয়া রইল, সে আমাগো আশ্রয় দেছে।

বেতাগী পৌর মেয়র এ বি এম গোলাম কবির বলেন, মকবুলের গোয়ালঘরে থাকার বিষয়টি জানার পর আমি তাকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখানে এত দিন তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিষয়টি জানার পর এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী মকবুলের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার এলাকার মানুষের দায়িত্ব আমার, তাই আমি নিজ অর্থায়নে বৃদ্ধকে পাকা ঘর তুলে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমি ভোটে জিতেও এত খুশি হইনি, মকবুলের জন্য কিছু করতে পেরে নিজের কাছে ভালো লাগছে। জীবনের বাকিটা সময় মকবুল সুখে-শান্তিতে থাকবে, সেই প্রত্যাশা রইল।

এনএ