রাজশাহীর বাঘায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২১ মার্চ) দুপুরে উপজেলার শাহদৌলা সরকারি কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। ওই সময় মঞ্চে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেলা ১১টার দিকে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। মঞ্চে অতিথিরা আসন গ্রহণের পরপরই সংঘর্ষ বাধে। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাছ আলীর সমর্থকরা মঞ্চের সামনে স্লোগান দিলে তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সমর্থকরা।

এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। শুরু হয় চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ভাঙচুর। বাঁশের লাঠি এবং বাটাম হাতে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে আতঙ্কিত হয়ে লোকজন সম্মেলন স্থল ত্যাগ করেন। 

দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শাহরিয়ার আলমের কর্মী সাইফুল ইসলাম ও সিরাজুল ইসলামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে পুলিশি তৎপরতায় দুই পক্ষ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরিস্থিতি শান্ত হলে শুরু হয় সম্মেলন।

এ ঘটনায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং আওয়ামী লীগ নেতা আক্কাছ আলীর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাঘা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ হোসেন জানান, দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীনতম দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ কখনো চোরাপথ বা অন্ধকার পথ দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তৃণমূলে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করতে জেলা-উপজেলায় সম্মেলন করা হচ্ছে। সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগে বিশৃঙ্খলাকারীদের কোনো জায়গা নেই।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও বিএমডিএ চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান। সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার।

সঞ্চালনা করেন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম বাবুল।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও সাধারণ সম্পাদক পদে আশরাফুল ইসলাম বাবুলের নাম ঘোষণা করা হয়। 

ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর