কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বদিয়ার মোড় পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তা। এটি দিয়ে চলাচল করে ২০ গ্রামের হাজারো মানুষ। কিন্তু একমাত্র সড়কটি এবড়োখেবড়ো হওয়ায় নারী-পুরুষ-শিশুদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। ধুলাবালু নাকেমুখে ঢুকে রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন সবাই। অসুস্থ ও গর্ভবতী নারীদের হাসপাতালে নিতে ভুগতে হয় সীমাহীন কষ্ট।

এলাকাবাসী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালে তারা উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান। তবে উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় বলছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই প্রকল্প অনুমোদন হবে।

সরেজমিনে ওই এলাকায় দেখা যায়, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বদিয়ার মোড় থেকে সাহেবের আলগা বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে লাউবাড়ি, গাছবাড়ি, কাজাইকাটা, চরকাজাইকাটা, শান্তিচর, আন্দবাজার, আমবাড়ি কাউনিয়ারচর, খেতারচর, চরধনতোলা, খেওয়ারচর, চরগয়টাপাড়া, ডিক্রিরচর, নামাজেরচর, পাড়েরচর, ইটালুকান্দাসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ।

বিষয়টি জানতে কথা হয় দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আবু সাঈদের সঙ্গে। তিনি বলেন, এই রাস্তা দিয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাফেরা করে। রাস্তাটির বেহাল হওয়ার কারণে ভোগান্তি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে ২০ গ্রামের মানুষ। এ ছাড়া প্রতিদিন ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। শুধু বড় গাড়ি নয়, ভ্যান-রিকশা-মোটরসাইকেলও চলাচল করতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়ে হেঁটে চলাচল করে সবাই। সরকারের কাছে জোর দাবি, দ্রুত রাস্তাটি পাকা করলে ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে সবাই।

এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন ইটালুকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল সরকার। তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার বালুময় রাস্তা পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। এ রাস্তা দিয়ে কোনো প্রকার যানবাহন চলতে পারে না। নিত্যদিন ধুলাবালুর কারণে সর্দিজ্বর ও শ্বাসকষ্ট লেগেই থাকে। এ ছাড়া গর্ভবতী নারীদের জরুরি হাসপাতালে নেওয়ার আগে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

স্থানীয় কলেজশিক্ষার্থী সুমন মিয়া বলেন, প্রতিদিন বালুময় রাস্তা হেঁটে আমাদের যেতে হয় কলেজে। একটা পোশাক একবার পরলে দ্বিতীয়বার পরা যায় না। ধুলাবালু নাকেমুখে ঢুকে যায়। রোগব্যাধিতেও আক্রান্ত হতে হয়। আর বৃষ্টি হলে তো আরও বিপদ। কাদায় ভরে যায় পুরো রাস্তা। সেদিন ভয়ে আর বের হই না। সরকারের কাছে রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবি করছি।

দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের যে বরাদ্দ আসে, তাতে বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া যায় না। রাস্তাটি সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মামুনুর ইসলাম বলেন, রাস্তাটি একটি নতুন প্রকল্প রুরাল ডেভেলপমেন্ট (আরডি) প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গত সপ্তাহে আরডি কর্তৃপক্ষের কাছে রাস্তার আইডি ও সঠিক নাম হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী মাসের মধ্যে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।

এনএ