পাবনার সুজানগর পৌরসভার কর্মচারী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিন হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের নাম প্রত্যাহার চেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবের সংবাদ সম্মেলনের পর তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। একই সঙ্গে তাকে সুজানগরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। 

উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের সমর্থক নেতাকর্মীরা এ বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ শেষে পৌরসভার সামনে আব্দুল ওহাবের কুশপুতুল দাহ করেন নেতাকর্মীরা।

তাদের দাবি- আল-আমিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির ও শাহীনুজ্জামান শাহীনকে নিয়ে গতকাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব অশালীন ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন।

সুজানগরের রাজনীতি কলুষিত করার দায়ে উপজেলায় আব্দুল ওহাবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে নেতাকর্মীরা বলেন, আল-আমিন আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তাকে হত্যার ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করলে আব্দুল ওহাবের পরিণতি ভালো হবে না।

বিক্ষোভ শেষে সমাবেশে বক্তব্য দেন সুজানগর পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রবিউল হক টুটুল, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক সরদার আব্দুর রউফ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজা হাসান, উপ-দপ্তর সম্পাদক রেজা মন্ডল, ইউনুস আলী বাদশা, সদস্য মাহমুদ্দুজ্জামান মানিক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি সরদার রাজু আহমেদ, পৌর আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ছাত্রলীগ নেতা এস এম সোহাগ প্রমুখ।

এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল সংবাদ সম্মেলনে আমি যেটা বলেছি, সেটা সঠিক। প্রকৃতপক্ষে মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। আমাকে দমিয়ে রাখতে সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। সুজানগরের আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহীন। জনগণকে আমার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামানোর পরিনাম ভালো হবে না।

উল্লেখ্য, গত ১৪ মার্চ দুপুরে সুজানগরের আতাইকুলা থানার সাদুল্লাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পূর্ববিরোধের জেরে সুজানগর পৌরসভার কর্মচারী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আল-আমিনকে (৩০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই লাল্টু প্রামানিক বাদী হয়ে ৩৪ জনের নামে মামলা করেন। এ মামলায় সুজানগর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুজানগর বাজার এলাকার সাদেক আলীর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন তোফা (৫০), তার ভাই সুজানগর পৌর যুবলীগের সভাপতি জুয়েল রানা (৪০), চর সুজানগর গ্রামের ওহের প্রামানিকের ছেলে লিটন হোসেন (৪২) এবং কাচারীপাড়ার শ্রী গৌর কুমারকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। 

রাকিব হাসনাত/আরএআর