প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় আবাদি জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলা ও রডের আঘাতে সুফিয়া খাতুন (৫০) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুপক্ষের মোট ৭ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত ৪ জনকে আটক করে পুলিশ। 

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়নের কুমপুকুরী এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত সুফিয়া খাতুন একই এলাকার কামরুজ্জামানের স্ত্রী। নিহতের স্বামী কামরুজ্জামান ১০ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। 

আহতরা হলেন— বাদীপক্ষের কামরুজ্জামান (৬৬), তার মেয়ে কল্পনা বেগম (২৮) ও ভ্যানচালক আসাদুজ্জামান (৪০), তার স্ত্রী জেমি বেগম (৩৫) এবং বিবাদীপক্ষের তৈবুল আলম (৬৫), তার স্ত্রী লুৎফা বেগম (৫৪) ও তাদের পুত্রবধূ নার্গিস আক্তার (২৫)। 

পুলিশ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কুমপুকুরী এলাকার বাসিন্দা কামরুজ্জামান ও একই এলাকার বাসিন্দা তৈমুল আলমের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে উভয়ের মধ্যে ৪ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। পরে এ জমি নিয়ে আদালতের মামলার গড়ায়। এদিকে এক বছর পূর্বে জমির বিরোধটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সালিশের মাধ্যমে সমাধান করা হলে সেই জমিতে চাষাবাদ করে আসছিল কামরুজ্জামান। 

তবে জমি নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। এদিকে বুধবার সকালে সেই জমিতে কামরুজ্জামানের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বাদাম বপনের জন্য ৪ শতক জমিতে ছাই ফেলতে যায়। এ সময় তৈবুল আলমের দুই ছেলে হারুন ও লতিফ এবং তৈবুলের ভাতিজা আফজালুর সুফিয়া খাতুনের উপর ছাই মারলে তিনি মাটিতে পড়ে গেলে তারা তাকে মারধর করে।

পরে কামরুজ্জামান ও তার মেয়ে কল্পনা তার মেয়েকে বাঁচাতে গেলে তাদের উপর হামলা করা হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা সুফিয়া খাতুন ও তার মেয়ে কল্পনা বেগমকে উদ্ধার করে বোদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে অটোভ্যান গতিরোধ করে হারুন, লতিফ ও আফজালুর। সেখানে আবারও তারা সুফিয়া ও মেয়ে কল্পনাকে রড দিয়ে মারপিট করতে থাকে।

পরে স্থানীয়রা ছুটে গেলে হারুন ও লতিফ পালিয়ে গেলেও আফজালুরকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। অন্যদিকে স্থানীয়রা দ্রুত আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করলে পরে সুফিয়া খাতুনের অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন এবং রংপুরে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।

এদিকে বোদা থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জাহিদুর ইসলাম সরকার বলেন, আমরা প্রাথমিক সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি । 

বোদা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা এ পর্যন্ত  তৈবুল আলম, তার স্ত্রী লুৎফা বেগম, তাদের পূত্রবধু নারগিস আক্তার ও আফজালুরসহ মোট ৪ জনকে আটক করেছি। বাকি জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।

রনি মিয়াজী/এমএসআর