পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় বাবার সই ও স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া দলিল তৈরির মাধ্যমে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া দখলকৃত জমির পেঁয়াজ তুলতে বাধা দেওয়ায় বাবা-মাকে মারধরের করা হয়। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভুক্তভোগী আব্বাস আলী বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) বিকেলে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মো. সিদ্দিকুল ইসলাম।

ভুক্তভোগী কৃষক সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর ইউনিয়নের কলাগাছি গ্রামের মৃত মনির উদ্দিন ব্যাপারীর ছেলে মো. আব্বাস আলী ব্যাপারী। আর অভিযুক্ত তার ছেলে রেজাউল ব্যাপারী। তিনি কাশিনাথপুরের বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কেরানি পদে কর্মরত।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে এক বিঘা ফসলি জমি বর্গা দেন আব্বাস। গত ২৬ মার্চ দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে বর্গাচাষী জমি থেকে পেঁয়াজ তুলতে গেলে অভিযুক্ত ছেলে বাধা প্রদান করেন। এ সময় জমির সব পেঁয়াজ ছিনিয়ে নেন তিনি।

এতে বাধা দিলে ছেলে, নাতি ও ছেলের বউ বেধরক মারপিট করে বাবা-মাকে। এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করা এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ বিষয়ে ছেলে রেজাউল, নাতী রুবেল আলী ও পুত্রবধূ মিনা খাতুনের বিরুদ্ধে সাঁথিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন আব্বাস আলী ব্যাপারী।

অন্যকে ভুয়া মালিক সাজিয়ে সাঁথিয়ার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল করা হলেও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকা ফরেনসিক ল্যাবরেটরির এক প্রতিবেদনে জালিয়াতির এমন কাণ্ড ধরা পড়ে।

সিআইডির পরিদর্শক ও অঙ্গুলাঙ্ক বিশারদ মো. আফজাল হোসেন তালুকদারের স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন পাবনার সাঁথিয়ার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, অভিযোগকারী আব্বাসের নামে দলিলে থাকা আঙ্গুলের ছাপগুলো সিআইডির ঢাকার ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এতে আব্বাস আলীর প্রকৃত ছাপের সঙ্গে দলিলে উল্লেখিত ছাপের মিল পাওয়া যায়নি।

মো. আব্বাস আলী ব্যাপারী বলেন, ছেলে আমার স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া দলিল তৈরি করে প্রায় ১ বিঘা জমি দখল করেছে। এর আগে জমি অন্যের কাছে বর্গা রেখেছিলাম। বর্গাচাষী পেঁয়াজ তুলতে গেলে আমার ছেলে বাধা দিয়ে পেঁয়াজ ছিনিয়ে নেয়। আমরা ঘটনাস্থলে গেলে ছেলে-নাতি আমাদের মারধর করে।

তিনি আরও বলেন, টাকা-পয়সা খরচ করে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছি। পরে কয়েক লাখ টাকা খরচ করে চাকরির ব্যবস্থা করেছি। অথচ সেই ছেলে আজকে আমার গায়ে হাত তুলল। ছেলে শিক্ষিত নামের কলঙ্ক, সে একজন সন্ত্রাসী। এর আগেও আমাদের মারধর করেছে। আমরা এর বিচার চাই।

অভিযুক্ত ছেলে রেজাউল করিমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মো. সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণ হলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাকিব হাসনাত/আরআই