অনুমতি ছাড়া খাল খনন, মাটি বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়
লক্ষ্মীপুরের সদরে ভুলুয়া খালের পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আল মাহমুদ হোসাইন অনুপমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে খালের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত ৩১ মার্চ উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গ্রামের বাসিন্দারা তাদের বিরুদ্ধে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও ঘটনাটি তদন্তের জন্য কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) সদর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আবদুল আল মামুনকে নির্দেশ দেন। এর আগে বুধবার (৩০ মার্চ) ইউএনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি অভিযুক্ত ও স্থানীয়দের সঙ্গেও কথা বলেছেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্ত অনুপম তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। তিনি তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলুর ছোট ভাই।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন অনুপমের সহযোগী রুবেল হাওলাদার ও জয়নাল আবেদন। তাদের মধ্যে রুবেল জেলা পরিষদের সদস্য ও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন হাওলাদারের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসীর পক্ষে কামাল উদ্দিন ও আবুল কালামের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গ্রামরে ডিসি খালটির আড়াই কিলোমিটার এলাকা থেকে প্রতিদিনই মাটি কাটা হচ্ছে। এ মাটি অভিযুক্তরা ইটভাটায় বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অভিযুক্ত রুবেল হাওলাদার নিজের ইটভাটায় ব্যবহার করছেন। তারা খালপাড়ের সরকারি গাছগুলো কেটে বিক্রি করে দিয়েছেন। রাস্তা কেটে চলাচলের তছনছ করে দিয়েছেন। যাতায়াতে মানুষকে এখন বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে ভুলুয়া পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আল মাহমুদ হোসাইন অনুপম বলেন, খালে পানি নেই। চাষাবাদের পানিনিষ্কাশনের জন্য খাল খনন জরুরি। কিন্তু আবেদনের তিন বছরেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এতে কৃষকদের কথা ভেবেই পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক ডেকে মাটি কেটে খাল খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে খালের মাটি ইটভাটায় বিক্রির অভিযোগ সত্য নয়। যারা খাল খনন করছে, তারাই মাটিগুলো নিচ্ছে।
তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাঈন ভুলু বলেন, পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি খাল খনন করছে। তারা মাটি বিক্রি করছে না। নিজের খরচে খাল খনন করায় ইটভাটায় মাটি নেওয়া হচ্ছে বলে শুনেছি।
তদন্তকারী কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী আবদুল আল মামুন জানান, পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির নাম ভাঙিয়ে অভিযুক্তরা একটি রেজল্যুশন দেখি খাল থেকে মাটি কাটছে। আবার সেই মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছে। মাটি কাটার কোনো অনুমতি নেই। অনুমতি ছাড়াই সরকারি খাল থেকে মাটি কেটে তারা আইন লঙ্ঘন করেছে।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসাইন বলেন, সরকারি খালের মাটি ইটভাটায় বিক্রির লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্তের জন্য বিএডিসি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ