মো. মাসুদ করিম

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে মো. মাসুদ করিম নামে এক ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসককে আটক ও ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার (০৬ এপ্রিল) ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ এ রায় দেন।

মাসুদ করিম আদালতের কাছে নিজেকে রংপুর সদরের রাধাবল্লব গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে বলে পরিচয় দেন।

জানা গেছে, জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে আল-শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন মাসুদ করিম। রোগীর ব্যবস্থাপত্রে এমবিবিএস (ঢাকা) ছাড়াও পিজিটি (মেডিসিন ও সার্জারি), ডিএমইউ (ঢাকা) ডিগ্রি ব্যবহার করতেন। চিকিৎসকদের সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সনদ নম্বরও উল্লেখ করেছেন।

ডায়াবেটিস, মা ও শিশু, গাইনি, হাঁপানি, নাক-কান-গলা (অপারেশন ব্যতীত), বাত-ব্যথা, হার্ট, চর্ম ও যৌন রোগের রোগী দেখতেন। তিনি সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রোগী দেখতেন আর নিজেকে পরিচয় দিতেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে।

এদিকে একজন রোগীর দেওয়া তথ্যে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ৪০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশতিয়াক আহমেদ এ রায় দেন।

ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানী বলেন, মো. মাসুদ করিম নিজেকে এমবিবিএস (মেডিসিন বিশেষজ্ঞ) চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ক্ষেতলাল উপজেলার আল-শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন। একজন রোগী চিকিৎসা নিতে গিয়ে মাসুদ রানা এমবিবিএস চিকিৎসক নন বলে সন্দেহ হয়। এরপর মাসুদ রানা নিজেকে ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসক বলে স্বীকার করেন। তখন স্থানীয় লোকজন তাকে আটকে রেখে থানায় খবর দেন এবং পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তার জরিমানা করা হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, মাসুদ রানা চিকিৎসক নন। তিনি  চিকিৎসক দাবি করে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখছিলেন। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার আইনে তার ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের কোথাও রোগী দেখবেন না বলে মুচলেকা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মো. মাসুদ করিম পাবনার ভাঙ্গুড়া হেলথ কেয়ার নামে একটি ক্লিনিকেও চিকিৎসক পরিচয়ে চিকিৎসা করছিলেন। পরে প্রকৃত ডা. মাসুদ করিমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নীলফামারী জেলা পুলিশের সহায়তায় সৈয়দপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। এছাড়া হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর এলাকার মুন জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে আটক হন তিনি। সে সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন।

চম্পক কুমার/এসপি