ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রসহ ১৬টি নদ-নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে বোরো ধানের আবাদ করেছেন কুড়িগ্রামের কৃষকরা। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির ফলে বোরো আবাদ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হাঁটু পানিতে আধাপাকা ধান কাটছেন কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায়, ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার কৃষকরা হাঁটু পানি কোথাও কোমর পানিতে নেমে কাঁচা ধান কাটছেন। বোরো ধানের আশানুরুপ ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখলেও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় সেই স্বপ্ন আর বাস্তবের মুখ দেখবে না বলে জানান চাষিরা। 

কৃষকরা জানান, হঠাৎ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধানের খড় নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। খড়-ধান পাওয়ার আশায় তাড়াহুড়ো করে কোমর পানিতে নেমে বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, নদ-নদীর বালুময় চরে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। তবে আর কয়েকদিনের মধ্যে কৃষকরা এসব ধান ঘরে তুলতে পারবেন।

ধরলা নদীর অববাহিকার উওর আরাজি কদমতলা গ্রামের কৃষক সাধু মিয়া বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ৪ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। আশা করেছিলাম ভালো ফসল পাব। কিন্তু হঠাৎ ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ধানগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। খড় পাওয়ার আশায় কাঁচা ধান কাটছি।

তিনি আরও বলেন, পানি না বাড়লে বিঘায় ১০-১২ মণ ধান পাওয়া যেত। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁচা ধান কাটার কারণে বিঘায় ৬-৭ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি।

রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর জানান, গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রামে ২০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে আগামীকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগে হালকা বজ্র বৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশীদ জানান, জেলার নদ-নদীর তীরে ১ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে এবং ফলনও ভালো হয়েছে। বৃষ্টিপাতের কারণে সামান্য একটু পানি বাড়লেও বোরো আবাদে তেমন প্রভাব পড়বে না।

মো. জুয়েল রানা/আরআই