এশিয়া উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ দিনাজপুরের গোড়-এ শহীদ ময়দান। এই ময়দানে গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে এবার পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় ঈদুল ফিতরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত।

গোড়-এ শহীদ ময়দানে একসঙ্গে ১০ লাখ মানুষ ঈদের জামাত আদায় করতে পারবেন। টানা দুই বছরের বিরতির পর আসন্ন ঈদের জামাত আয়োজনে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আয়োজক কমিটি।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৃহত্তম এই ঈদগাহ্ ময়দানের উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী, জাতীয় সংসদের হুইপ (দিনাজপুর-৩) ইকবালুর রহিম।

প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি জানান, এবারও এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত দিনাজপুরে অনুষ্ঠিত হবে। দু-এক দিনের মধ্যেই আয়োজনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এই মাঠে প্রতিবার প্রায় ৬ থেকে ৭ লাখ মানুষের সমাগম হয়। তবে এবার ১০ লাখ মানুষের ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হবে। ঈদের জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা শামসুল ইসলাম কাসেমী।

ইতোমধ্যেই আধুনিক স্থাপত্যশৈলী সমৃদ্ধ ঈদগাহ মিনারকে নতুন সাজে সাজানো হয়েছে। সন্ধ্যা হলেই রঙিন বাতিতে আলোকিত হচ্ছে বিশাল এই ময়দান। নজর কাড়ছে ছোট-বড় সব বয়সী মানুষের।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ২০১৭ সালে নির্মিত ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এই ৫০ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে।

ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাবের (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) উচ্চতা ৪৭ ফুট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এ ছাড়া ৫১৬ ফুট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। উপমহাদেশে এত বড় ঈদগাহ মাঠ দ্বিতীয়টি নেই।

২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর এখানে ঈদের নামাজ আদায় করেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা-উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদগাহ মাঠজুড়ে নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি রাখা হচ্ছে।

মাঠের আশপাশে র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রাখার প্রস্তুতি রয়েছে।

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী ঢাকা পোস্টকে বলেন , করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধির বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গত দুই বছর দেশের বৃহৎ ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়নি। করোনা পরিস্থিতি অনেকাংশে স্বাভাবিক হয়েছে। দীর্ঘ সময় পরে ঈদগাহ মাঠে মুসল্লিরা যেন আনন্দের সঙ্গে উৎসবমুখর পরিবেশে নামাজ আদায় করতে পারেন, সেজন্য পৌর প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। মাঠ সাজানো হবে। ওয়াচ টাওয়ার বসানো হবে।

সোহাগ/এনএ