তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই সময়কার নতুন প্রযুক্তি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করার জন্য প্রথম ইয়ার্থ স্যাটেলাইট স্টেশন স্থাপন করেছিলেন। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ মানবসম্পদ, সকলের জন্য ইন্টারনেট, ডিজিটাল সেবা এবং প্রযুক্তি শিল্পের উন্নয়নকে একটি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে কাজ করছেন।

শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার একটা প্রবণতা আছে। উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পর শুধুমাত্র সরকারি চাকরি অথবা বিদেশে যাওয়ার একটা প্রবণতা আছে। যারা গবেষক, প্রফেসর হবেন- তাদের জন্য বিশেষভাবে উচ্চশিক্ষার প্রয়োজন। কিন্তু সবার তো মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের প্রয়োজন নেই, পিএইচডি করার দরকার নেই। যদি এসএসসি-এইচএসসি পাস করে একজন তরুণ-তরুণী যার যার জেলায়, যার যার উপজেলায়, কিংবা যার যার শহরে ছয় মাসের একটা সার্টিফিকেট কোর্স করে, এক মাসের একটা ছোট শর্ট কোর্স করে কিংবা এক বছরের একটা ডিপ্লোমা কোর্স করতে পারে, ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স ডিজাইনের ওপরে প্রশিক্ষণ নিতে পারে, তাহলে সেই তরুণ-তরুণীদের পক্ষে ঘরে বসে হাজার হাজার ডলার আয় করা সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, যদি প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার তৈরি করে দেওয়া হয়, তাহলে লাখ লাখ তরুণ-তরুণী ঢাকামুখী হবে না, বিদেশমুখী হবে না। তারা যার যার শহরে, যার যার ঘরে বসে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে। তার প্রেক্ষিতেই কিন্তু আমরা শেখ কামাল ট্রেনিং সেন্টার উপহার দিয়েছি জয়পুরহাটবাসীকে।

জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ।
 
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. রফিকুল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো.  শরীফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, কালাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন, কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদার, কালাই পৌরসভার মেয়র রাবেয়া সুলতানা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নাধীন শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টারের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের আওতায় জয়পুরহাটের ৪২ জন ফ্রিল্যান্সারের মাঝে ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।

এর আগে বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক কালাইয়ের শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।

দেশের ৬৪টি জেলায় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। যার প্রথম ধাপে ১১টি জেলার মধ্যে জয়পুরহাটে আজ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হলো। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এবং সেনাবহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ১১টি জেলায় প্রায় ৭৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

চম্পক কুমার/আরএআর