পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার খানপুরের আবু মুছা খা নামে এক চরমপন্থী নেতাকে হত্যার দায়ে তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় ২০ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আহসান তারেক এ রায় দেন। নিহত আবু মুছা খাঁ উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের মৃত জয়নাল খাঁর ছেলে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পাবনা সদর উপজেলার তারাবাড়িয়ার সৈয়দ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৪০), আতাইকুলার গাঙ্গুহাট ক্লাবপাড়ার মো. ইউসুফের ছেলে খোকন (৪২) এবং সাঁথিয়ার ভদ্রখোলার ইউসুফ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫)। দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৩ আগস্ট সকালে সাইকেল মেরামতের দোকানে কাজে যাওয়ার সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ১০-১২ জন সন্ত্রাসী আবু মুছা খাঁকে হাটবাড়ীয়া-বোয়াইলমারীর ডাব বাগানের ভেতরে নিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যান। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার নিহতের স্ত্রী মোছা. রহিমা খাতুন সাঁথিয়া থানায় অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে পরের বছর ২০০৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণসহ দীর্ঘ শুনানির পর আজ আদালত হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ও পরিকল্পনাকারী তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন এবং বাকিদের খালাসের আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খান, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম আলতাব, অ্যাডভোকেট আহাদ বাবু এবং অ্যাডভোকেট আব্দুর রউফ মামলাটি পরিচালনা করেন। 

অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক ঢাকা পোস্টকে জানান, ভিকটিম ও আসামিরা সবাই চরমপন্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে শত্রুতা তৈরি হয়। এর জেরেই তাকে হত্যা করা হয়। আসামিরা চরমপন্থী হওয়ায় সাক্ষী দিতে অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন। ফলে মামলার কার্যক্রম দীর্ঘায়িত হয়। এ মামলার রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।

রাকিব হাসনাত/আরএআর