চারঘাট ছাত্রলীগের সভাপতি আল মামুন তুষারকে নেওয়া হয় রামেক হাসপাতালে

পৌরসভা নির্বাচনে পোস্টার লাগানো নিয়ে রাজশাহীর চারঘাটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন অন্তত ৭ জন। শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়।

আহতদের মধ্যে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আল মামুন তুষারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ডান হাতে গুরুতর জখম নিয়ে হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন তিনি। 

স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে সকাল থেকেই বিএনপির কর্মীরা দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুলের ধানের শীষ প্রতীকের পোস্টার সাঁটাচ্ছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তারা চারঘাট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় গেটে পোস্টার টাঙাতে যান। 

ওই সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাদের বাধা দেয়। তারা ছাত্রদলকর্মী রুবেল হোসেনসহ ধানের শীষের দুই কর্মীকে পিটিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ ও বর্তমান মেয়র জাকিরুল ইসলাম বিকুল চারঘাট চার রাস্তার মোড়ে পৌঁছান। 

সংঘাত এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন

সেখানে আগে থেকেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একরামুল হকের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজ ক্লিনিকের সামনে পৌঁছালে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় একপক্ষ আরেক ক্ষকে দমাতে উপর্যুপরি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। 

পালাতে গিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তুষার মাটিতে যান। এ সময় ধানের শীষের প্রার্থীর লোকজন তাকে কুপিয়ে জখম করে।  সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতা ইকবাল হোসেন মুক্তা, আওয়ামী লীগ কর্মী আজিম উদ্দীন, শ্রমিকলীগ নেতা বিপ্লব আহত হয়েছেন।

চারঘাট পৌর মেয়র ও ধানের শীষের প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম বিকলের দাবি, তিনি তার মায়ের কবর জিয়ারত করে প্রচারণায় নামতে যাচ্ছিলেন। নেতাকর্মীদের নিয়ে চারঘাট বাজারে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা চালায়। এতে বিএনপির অন্তত ৫ নেতাকর্মী আহত হয়। 

ধানের শীষের লোকজনের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ আনেন চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম। তিনি বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী একরামুল হকের পোস্টারের উপরে ধানের শীষের পোস্টার লাগাচ্ছিলেন বিএনপির লোকজন। নিষেধ করলে তারা সংঘর্ষে জড়ান।

পরে বিএনপির নেতা আবু সাঈদ চাঁদ ও মেয়র প্রার্থী জাকিরুল ইসলাম বিকুলের নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র হাতে হামলা করেন। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এতে আওয়ামী লীগের অন্তত ৭ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদিকে, দুপক্ষের সংঘর্ষের পর থেকে চারঘাট পৌর সদরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। 

চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। সংঘাত এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ নিয়ে এখনও থানায় অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর