ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে যুবলীগ নেতার প্রভাব খাটিয়ে বাদল সিকদার নামের এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে চালকলের জায়গা দখল করার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের শিকার বাদল আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের মৃত মোস্তফা আলীর ছেলে।

এ ঘটনায় আহত বাদলের ছোট ভাই সজল সিকদার বাদী হয়ে ১০ এপ্রিল আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের মৃত খুরশিদ সিকদারের ছেলে বাবুল সিকদার (৫০), মার্শাল সিকদার (৪৮) ও তারেক সিকদার (৩০) এবং মৃত আকতার সিকদারের ছেলে সৈকত সিকদার (৩৪) ও শৈবাল সিকদার (৩২)।

মারধরের শিকার বাদল সিকদারের অভিযোগ, তার আপন বোনজামাই ও চাচাতো ভাই মার্শাল সিকদার দীর্ঘদিন ধরে তার চালকলের জায়গা দখলে নেওয়ার পাঁয়তারা করে আসছিলেন। মূলত মার্শাল তার ভগ্নিপতি উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাইফুর রহমান মনির প্রভাব খাটিয়ে জায়গা দখলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় অপতৎপরতা চালিয়েছেন। সর্বশেষ ৭ এপ্রিল জায়গা দখলে নিতে এসে মার্শাল ও তার লোকজন বাদলকে মেরে পা ভেঙে দেন।

মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, ৭ এপ্রিল মার্শাল ও মামলার বাকি আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোনারামপুরে বাদল সিকদার ও তার চার ভাইয়ের মালিকানাধীন সিকদার রাইস মিলে গিয়ে ভাঙচুর চালান। এ সময় বাদল সিকদার বাধা দিলে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়। পরে পরিবারের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।

এদিকে আদালতে মামলা করার পরও মার্শাল ও তার লোকজন সিকদার রাইস মিলে গিয়ে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের চেষ্টা করে। এ নিয়ে আশুগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও মার্শালের ভগ্নিপতি যুবলীগ নেতা সাইফুর রহমান মনির দাপটে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বাদীপক্ষ।

মামলার বাদী সজল সিকদার বলেন, মামলা করার পরও আসামিরা এসে আমাদের জায়গা দখলে নিয়ে পাকা দেয়াল দিয়েছে। পুলিশ এ বিষয়ে আমাদের কোনো সহযোগিতা করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। আমরা আবারও হামলার ভয়ে গৃহবন্দি হয়ে আছি। এ অন্যায়-অত্যাচারের বিচার চাই।

তবে অভিযোগ বিষয়ে যুবলীগ নেতা সাইফুর রহমান মনি জানান, তার প্রভাব খাটিয়ে জায়গা দখলের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এ ছাড়া তিনি পুলিশকেও কোনোভাবে প্রভাবিত করছেন না।

অভিযুক্ত মার্শাল সিকদার বলেন, পৈতৃক সূত্রে আমার স্ত্রী জায়গার মালিক। বাদলসহ তারা তিন ভাই বোনদের অংশ বাদ দিয়ে তাদের উচ্ছ্বেদ করার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট জায়গা পজিশন নিয়েছে। তারা ইট-বালু ফেলে সেখানে কাজও করেছে। তাদের বড় বোন আমাকে বলেছে যে তাদের তিন বোনের যে জায়গা আছে, সেটি যেন আমি পজিশন নিই। আমি এবং সার্ভেয়ার জায়গা মেপে খুঁটি সীমানা দিয়েছি।

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বলেন, ভাইদের সঙ্গে বোনদের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে। যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে, আদালতেই বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে।

আজিজুল সঞ্চয়/এনএ