নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সম্মেলনে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেছে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের গ্র্যান্ড তাজ পার্টি সেন্টারে এ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সংঘর্ষে চলাকালে পার্টি সেন্টারটির প্রধান ফটক ও চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করা হয়েছে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) বেনজীর আহমেদ টিটুর। 

এটি জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি ও সদস্য সচিব মামুন মাহমুদের নিজের থানা। অথচ সকাল ৯টায় সম্মেলনের সময় নির্ধারণ করে নেতা-কর্মীদের জানানো হলেও এতে মারধরের ভয়ে উপস্থিত হননি মামুন মাহমুদ। অপরদিকে রবি উপস্থিত থাকলেও ঘটনার সময় কোনো পক্ষকেই নিবৃত্ত করতে দেখা যায়নি তাকে। বরং তিনি সম্মেলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। 

জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির নির্বাচনী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াসউদ্দিন ও তার অনুগত কোনো নেতা-কর্মীদের সম্মেলনের ব্যাপারে জানানো হয়নি এবং তাদের কোনো কমিটিতে রাখা হয় না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ ছিল তাদের। এর মধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের জানানো হয়নি বলে অভিযোগ উঠে। পরে তাদের ক্ষোভের সঙ্গে সহমত জানায় থানা বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের একটি অংশ। তারা আজ সকাল থেকেই সম্মেলনস্থলে বিএনপি নেতা কাউন্সিলর ইকবালের নেতৃত্বে অবস্থান নেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের তারা বিষয়গুলো অবহিত করবেন বলে জানান। পরে মামুন মাহমুদের পক্ষের একটি মিছিল সভাস্থলে স্লোগান নিয়ে প্রবেশ করার পরপরই তাদের উপর চড়াও হন গিয়াসউদ্দিন বলয়ের নেতা-কর্মীরা। এ সময় উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও মারামারি হয়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।

জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে হাল্কা সমস্যা ছিল। এখন পরিস্থিতি শান্ত। সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে। এক পক্ষ ভেতরে ও আরেক পক্ষ বাইরে অবস্থান নিয়েছিল। তবে আমি কাউকে আহত হতে দেখিনি।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ বলেন, ওরা গত নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছে, আওয়ামী লীগ ঘেঁষা। পরিকল্পিতভাবে সম্মেলনকে পণ্ড করতে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা করা হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সদস্য কাউন্সিলর ইকবাল জানান, এখানে নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে দলীয় পদ পদবি থেকে বঞ্চিত। কোনো কর্মসূচি থাকলেও নেতা-কর্মীদের জানানো হয় না। আজ থানা বিএনপির সম্মেলনের ব্যাপারেও নেতা-কর্মীদের কাউকে জানানো হয়নি। থানার বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে ভাড়া করা লোক দিয়ে সম্মেলন করার চেষ্টা করা হয়। অথচ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা অবহেলিত থাকে। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। পুরো থানা বিএনপির তৃণমূল ক্ষুব্ধ।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম জুয়েল বলেন, আজ বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ছিল। এ নিয়ে কমিটির পদবঞ্চিতদের সঙ্গে সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ একটি প্রোগ্রাম ছিল। সেখানে নিজেদের মধ্যে সমস্যা থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।

রাজু আহমেদ/আরএআর