আজ ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন বর্ণাঢ্য আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

রোববার (১৭ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির মূল কার্যক্রম শুরু হয়। পরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের পর পুলিশ, বিজিবি, স্কাউট, বিএনসিসি ও আনছার বাহিনী সমন্বিত গার্ড অব অনার প্রদান করেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে অভিবাদন গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ সময় মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে যোগ দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, সংসদ সদস্য ফ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।

এর আগে রোববার সকাল ৬টার দিকে মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিকেন্দ্রে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে মুজিবনগর দিবসের উদ্বোধন করা। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান।

দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এর আগে রোববার ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং সারাদেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করে আওয়ামী লীগ। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। সকাল ১০টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে আওয়ামী লীগ। সকাল সোয়া ১০টায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য একটি দিন আজ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এই দিনে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামের আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে। পরে বৈদ্যনাথতলাকে ঐতিহাসিক মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়।

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। এ ভাষণে তিনি দেশব্যাপী পরিচালিত প্রতিরোধ যুদ্ধের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তাজউদ্দীন আহমদের ভাষণের মধ্য দিয়েই দেশ-বিদেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনার লক্ষ্যে একটি আইনানুগ সরকার গঠিত হয়েছে। এরই পথপরিক্রমায় ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

২৫ মার্চ কালরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। প্রবাসী সরকারের অধ্যাদেশে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।

আকতারুজ্জামান/এনএ