গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ও বল্লমঝাড় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায় একটি হাতির তাণ্ডবে কয়েক বিঘা জমির বোরো ফসল বিনষ্ট হয়েছে। 

রোববার (১৭ এপ্রিল) সকাল থেকে হাতিটি তাণ্ডব শুরু করে। সদ্য শীষ বের হওয়া এসব বোরো ফসল নষ্ট হওয়ায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ওই এলাকার কৃষকদের মাঝে। সকাল থেকে প্রায় সাত ঘণ্টা চেষ্টা করেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিকেল পর্যন্ত কোনোভাবেই হাতিটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি হাতির মালিক (মাহুত), ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

স্থানীয়রা জানায়, সকালে গাইবান্ধা-নাকাই সড়কে হাতির মাহুত হাতিটিকে দিয়ে আটোরিকশা, রিকশা-ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকিয়ে চাঁদা তুলছিল। এ সময় হঠাৎ হাতিটি মাহুতের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং রাস্তার পাশের ধানের জমি দিয়ে হাটতে থাকে। হাতিটির মালিক শত চেষ্টা করেও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। হাতিটি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রামচন্দ্রপুর, আকন্দপাড়া, তিনমাইল, মাঠেরপাড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকার ধানের জমিতে তাণ্ডব চালায়। হাতির এমন ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে আশেপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ হাতিটি দেখদে ভিড় জমায়।

তিন মাইল এলাকার কৃষক রাজা মিয়া জানায়, কেবল ইরিধানগুলো ফুলতিছে (সদ্য শীষ বের হওয়া)। এ সময় হাতিটি জমিতে নেমে যেভাবে হাঁটাহাটি করছে। তাতে জমির অনেক ধান নষ্ট হবে। হাতিটি যে দিক দিয়ে যাচ্ছে সেখানকার ধান গাছগুলো নষ্ট হচ্ছে। এসময় তারা আতঙ্কে রয়েছেন বলেও জানান।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হাতিটির মাহুতের বরাদ দিয়ে গাইবান্ধা ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার নাসিম রেজা নিলু ঢাকা পোস্টে জানান, সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বালুয়া নামক এলাকার পাশে ঠাকুরবাড়িতে প্রতি বছর বৈশাখী মেলা হয়। যার নাম ঠাকুরবাড়ি মেলা। বগুড়া থেকে ওই মেলায় খেলা দেখানোর জন্য হাতিটিকে নিয়ে আসা হয়েছে। 

কেন এমন আচরণ করছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি হাতির মালিক মাসুদ ও খাইরুলের সঙ্গে কথা বলে যতটা জানতে পেরেছি, হাতিটির গরম (হিটে) এসেছে। তাই এখন নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। হাতিটিকে প্রজনন করানো জরুরি। 

এসময় তিনি আরো বলেন, হাতিটিকে প্রজনন (ব্রিডিং) করানোর জন্য বগুড়া থেকে পুরুষ হাতি আনা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, প্রায় ১০ কিলোমিটারজুড়ে হাতিটি তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে আনুমানিক ৫০ বিঘা জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। আমরা স্থানীয়দের সতর্ক করছি। তবে রাত হচ্ছে তাদের মাঝে আতঙ্কও বাড়ছে।

রিপন আকন্দ/এমএএস