মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের বড়াইলবাড়ি এলাকার রাজীব বাড়ৈ (১৯)। বাবা নিখিল বাড়ৈ পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। চরম পরিশ্রম করে তিন ছেলে-মেয়েকে বড় করেছেন। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট রাজীব। মাত্র ১৩০ টাকা খরচ করে পুলিশের  ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি পেয়েছেন রাজীব। কোনো প্রকার অর্থ লেনদেন ছাড়া চাকরি পেয়ে আপ্লুত তিনি। 

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে মাদারীপুর জেলায় ৩৩টি পদের বিপরীতে ১ হাজার ১২৪ জন চাকরি প্রত্যাশী আবেদন করেন। ২৭ মার্চ থেকে বাছাই পরীক্ষা শুরু হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে ৮ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষা ও ২০ এপ্রিল মৌখিক পরীক্ষা শেষে মেধা তালিকা অনুযায়ী বিভিন্ন কোটা বিভাজন করে ২৮ জন তরুণ ও ৫ জন তরুণীকে মনোনীত করা হয়।

গতকাল বুধবার (২০ এপ্রিল) রাতে মাদারীপুর পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে উত্তীর্ণদের নাম ঘোষণা করেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।

উত্তীর্ণরা জানান, মাত্র ১৩০ টাকায় অনলাইন আবেদন করে কোনো প্রকার ঘুষ ছাড়াই নিজের যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা। স্বচ্ছ নিয়োগ ও নিজ যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তারা পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানান। 

কনস্টেবল পদে উত্তীর্ণ রাজীব বাড়ৈ বলেন, আমার বাবা একজন সামান্য কাঠমিস্ত্রি। তিনি অনেক পরিশ্রম করে আমাকে পড়াশোনা করিয়েছেন। কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি ১৩০ টাকায় সরকারি চাকরি পাব। আমি আমার যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়েছি। আমি মাদারীপুরের পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই।

কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া সমাপ্তি রায় বলেন, আমার বাবা একজন কাঠমিস্ত্রি। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে আমার বড় হওয়া। বাবার আয়ে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে কষ্ট হয়ে যেত। এতো তাড়াতাড়ি সরকারি চাকরি হয়ে যাবে স্বপ্নেও ভাবিনি।

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনায় গত বছরের ন্যায় এবারও ১০০ ভাগ সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতায় ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। সবাই সবার যোগ্যতা অনুযায়ী সিলেকশন হয়েছে। প্রত্যেকটি জায়গায় চাকরির ক্ষেত্রে আমরা যদি এভাবে বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লোক নিতে পারি, তাহলে আমাদের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। 

নাজমুল মোড়ল/আরএআর