পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পাবনা পুলিশ লাইন্স মাঠে এসেছিলেন ২ হাজার ৩০০ জন তরুণ-তরুণী। এদের মধ্যে দক্ষতা, যোগ্যতা ও মেধার ধারাবাহিক প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ের হাসি হাসতে পেরেছেন ৭০ জন। পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে আবেগ আপ্লুত এসব তরুণ-তরুণীরা।

দীর্ঘ শারীরিক যাচাই-বাছাই, লিখিত, মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা থেকে ৭০ জন তরুণ-তরুণীকে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঘুষ-তদবির ছাড়াই পুলিশে চাকরি হওয়ায় আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন এসব তরুণ-তরুণীরা। নিয়োগপ্রাপ্তরা অনেকেই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। সব উৎকণ্ঠা দূর করে অবশেষে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন তারা। এই খুশিতে অনেকে কেঁদেও ফেলেন। 

জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ পাবনা পুলিশ লাইন্স মাঠে শারীরিক যাছাই-বাছাইয়ে অংশগ্রহণ করেন ২ হাজার ৩০০ তরুণ-তরুণী। এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন ৬৯৭ জন। ৮ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষা শেষে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হন ২১৯। সর্বশেষ আজ মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হন ৭০ জন।

নিয়োগবোর্ডে উপস্থিত ছিলেন পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান, নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহসীন এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলাম।

চূড়ান্তভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান। তাদের দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার আহ্বান জানান তিনি। 

পুলিশ সুপার বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত তরুণ-তরুণীদের এই হাসির পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আইজিপি বেনজীর আহমেদ স্যারের। আমরা বিশ্বাস করি আজকে নির্বাচিত তরুণ-তরুণীরা দেশপ্রেমের মহান শপথে বলিয়ান হয়ে জনগণের প্রকৃত বন্ধু হয়ে তাদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় নিজেকে উৎসর্গ করবেন।

তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত প্রার্থীদের অভিভাবকরা কখনো বিশ্বাসই করতে পারেননি তাদের সন্তানদের বিনা টাকায় পুলিশে চাকরি হবে। শুধু চাকরি নয়, নিয়োগপ্রাপ্তদের সব ধরনের মেডিকেল চেকআপ বিনামূল্যে করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বচ্ছতা ও সততার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এসব মেধাবীকে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সবার মধ্যে একটি ভুল ধারণা ছিল যে টাকা ছাড়া পুলিশের চাকরি পাওয়া যায় না। এসব দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা চাকরি পাওয়ায় অনেকের এই ভুল ধারণা দূর হয়েছে। 

রাকিব হাসনাত/আরএআর