সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ঈদগাহ মাঠের কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষ ও সলঙ্গায় মসজিদে ইমামের টাকা তোলা নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় দুজন মারা গেছেন। শাহজাদপুরের ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬ জন। এ ছাড়া পৃথক দুটি ঘটনায় ৭ জনকে আটক করা হয়েছে।

দুটি ঘটনায় আটক ব্যক্তিরা হলেন সলঙ্গা থানার চক মনোহরপুর গ্রামের ইউসুফ আলী (৫৪) ও শাহজাদপুরের হরিরামপুর গ্রামের আল-আমিন (৩৪), আনোয়ার হোসেন (৪৫), মোতাহারুল হক (৬৫), হাবিবুল হক হারুন (৩৫), আব্দুস সাত্তার খান (৪৫) এবং সাকিল হোসেন সরকার (২৩)।

শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) নেওয়ার পথে খোরশেদ আলম (৫৫) নামে সলঙ্গার এক ব্যক্তি মারা যান। তিনি সলঙ্গা থানাধীন চক মনোহরপুর গ্রামের মৃত কছিম উদ্দিনের ছেলে।

এর আগে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) জুমার নামাজ শেষে চক মনোহরপুর মধ্যপাড়া জামে মসজিদে ইমামের বেতনের টাকা তোলা নিয়ে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে চক মনোহরপুর মধ্যপাড়া জামে মসজিদে ইমামের বেতনের টাকা তোলা নিয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি ইউসুফ আলীর বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ওয়াজেদ আলী সরকারের সঙ্গে তর্কবিতর্ক হয় খোরশেদ আলমের। একপর্যায়ে মসজিদের বাইরে এসে ইউসুফ আলী ও তার লোকজন খোরশেদ আলমকে মারধর করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। শনিবার সকালে অবস্থার অবনতি হওয়ায় বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে শাহজাদপুরে ঈদগাহ মাঠের কমিটি গঠন নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়। শুক্রবার বিকেলে লুৎফর রহমান ও আকমল গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনার এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় অন্তত ৭ জন আহত হন।

পরে শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিপ্লব হোসেন (৪২) নামে এক ব্যক্তি মারা যান।

তিনি শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের হরিনাথপুর গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে।
 
শাহজাদপুরের হরিরামপুর গ্রামবাসী জানান, শুক্রবার বিকেলে ঈদগাহ মাঠের কমিটি গঠন নিয়ে লুৎফর রহমান ও আকমল গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় অন্তত ৭ জন আহত হন। তাদের মধ্যে বিপ্লব হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাতেই ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বিপ্লব হোসেন। আহতদের মধ্যে জাহাঙ্গীর মাস্টার, তোরাব আলী, আব্দুল মতিন ও সাকিল হোসেনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, ঈদগাহ মাঠের কমিটি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিপ্লব হোসেন মারা গেছেন। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে জেলার বেলকুচি উপজেলার তেয়াশিয়া গ্রামে তারাবীর নামাজ পড়ানোর জন্য নিযুক্ত ইমামের বেতনের টাকা তোলা নিয়ে মসজিদের মধ্যে দুপক্ষের কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বাবুল হোসেন (৪২) নামে এক দিনমজুর নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হন অন্তত ১৫ জন।

শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাবুল হোসেন। নিহত বাবুল হোসেন তেয়াশিয়া গ্রামের মৃত ছাত্তার আলীর ছেলে।

শুভ কুমার ঘোষ/এনএ