ঈদ উপলক্ষে জাজিরা-শিমুলিয়া ফেরি রুটে নতুন করে আরেকটি ফেরিঘাট নির্মাণের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এদিকে ফেরিঘাট নির্মাণের জন্য ওই স্থানের লঞ্চঘাটটি ৪০০ মিটার পূর্বদিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকালে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের জিরো পয়েন্টের দিকে লঞ্চঘাট স্থানান্তর করা হয়েছে। শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে নতুন ঘাট থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, জাজিরার মাঝিরঘাটের লঞ্চঘাটে পদ্মা নদীতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫০ ফুট প্রশস্ত ফেরিতে ওঠার জন্য রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ফেরিঘাট নির্মাণে কাজ করছেন শ্রমিকরা। এর ৪০০ মিটার দূরে স্থানান্তর করা হয়েছে লঞ্চঘাট। তবে সেখানে গাড়ি যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। যাত্রীদের হেঁটেই লঞ্চে উঠতে হচ্ছে। নিজেদের মালামাল নিজেদের বহন করে নিতে হচ্ছে লঞ্চঘাটে। এতে কিছুটা ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে তাদের।

ডামুড্যা থেকে আসা এক বাসযাত্রী হেলানা কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাস বা সিএনজি থেকে নেমে আগে লঞ্চে উঠতে পারতাম। এখন লঞ্চঘাট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাচ্চা ও ব্যাগ নিয়ে কিছুটা হেঁটে লঞ্চে উঠতে হচ্ছে। আবার বৃষ্টির কারণে পুরো ঘাটে কাদামাটি হয়ে রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানা যায়, বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া নৌপথ দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন ফেরি পারাপার হয়ে থাকে। ওই নৌপথে ফেরি চলতে গিয়ে গত বছরের ২০ জুলাই পদ্মা সেতুর একটি পিলারের সঙ্গে রো রো ফেরির ধাক্কা লাগে। এরপরও নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে বেশ কয়েকবার পদ্মা সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে ফেরির। এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৮ আগস্ট থেকে ওই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া।

এতে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ চরম বিপাকে পড়ে। এরপর নদীর স্রোত কমে গেলে গত নভেম্বরে ওই নৌপথে দিনের বেলা স্বল্প পরিসরে ফেরি চলাচল শুরু করে। জরুরি সেবা নিশ্চিত করতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার সাত্তার মাদবর-মঙ্গল মাঝির ঘাট এলাকায় গত বছরের ২৫ আগস্ট নতুন করে একটি ফেরিঘাট নির্মাণ করা হয়। প্রথমে নাব্যতা-সংকটের কারণে ওই পথে ফেরি চলাচল শুরু করা যায়নি।

গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ওই নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু করা হয়। গত সোমবার নৌপথটি পরিদর্শন করেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। তখন সাত্তার মাদবর, মঙ্গমাঝির ঘাটে আরেকটি ফেরিঘাট নির্মাণের ঘোষণা দেন। এরপর সংস্থাটির প্রকৌশল বিভাগ গত বুধবার থেকে ফেরিঘাট নির্মাণকাজ শুরু করে।

বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশল বিভাগের কার্যসহকারী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল ঢাকা পোস্টকে মুঠোফোনে বলেন, দ্রুতগতিতে ফেরিঘাট নির্মাণে কাজ করছেন শ্রমিকরা। পন্টুন প্রস্তুত করা হয়েছে। কাজ শেষ হলেই তা লাগানো হবে। আশা রাখি ২৭ এপ্রিলের মধ্যেই ফেরিঘাট নির্মাণের কাজ শেষ হলে ফেরি চলাচল করতে পারবে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এনএ