ছেলের বয়স ১৬ বছর। এই বয়সেই বিয়ের জন্য ছেলেকে চাপ দিতে থাকেন তার বাবা। কিন্তু কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না ওই ছেলেটি ও তার মা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে ও স্ত্রীকে বেধড়ক মারধর করেন বাবা। এমন অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ছেলেটির বাবাকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

শুক্রবার (২২ এপ্রিল) রাতে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উলিপুর গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টুকটুক তালুকদার এ রায় দেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম আবু কালাম। তিনি কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের উলিপুর গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে বাবা আবু কালাম বিয়ের জন্য তার ১৬ বছর বয়সের ছেলে ও তার মাকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। ছেলে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় বাবা আবু কালাম ছেলের মা ও ছেলেকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। এক পর্যায়ে শুক্রবার ইফতারের পর তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রী ও ছেলেকে মারপিট করে আহত করেন। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা ওই ছেলে ও তার মাকে উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।

ওই ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেন আবু কালামের ছেলে। এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টুকটুক তালুকদার বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনে আবু কালামকে পুলিশের সহায়তায় গ্রেপ্তারের পর রাতেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টুকটুক তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোনো বাবা-মা-ই তার অপ্রাপ্ত বা নাবালক ছেলে-মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ে দিতে পারেন না। যদি দেন তাহলে বাল্য বিবাহ নিরোধ আইনে তাকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ করতে হবে। ফলে ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে বাবা আবু কালামকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণের প্রেক্ষিতে এক মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়ে হাজতে পাঠানো হয়।

চম্পক কুমার/আরআই