কুড়িগ্রামের সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা ফুলবাড়ী। এই উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এখানে রোগীদের জন্য দুটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তবে দেড় বছর ধরে চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার তিন লাখের বেশি মানুষ। 

রোগীর স্বজনরা বলছেন, সরকারি ভাড়ার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি টাকা দিয়ে রোগীকে নিয়ে যেতে হয় জেলাসহ বিভাগীয় শহরে। তাই দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সের চালক নিয়োগের অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামছুন্নাহারসহ আরও একজন চিকিৎসকের কোয়াটারে চুরির ঘটনা ঘটে। কোয়াটারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে চারজনকে আটক করে পুলিশ। নির্দেশদাতা হিসেবে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলীকেও আটক করা হয়। পরে পাঁচজনের বিরুদ্ধে চুরির মামলা দিয়ে তাদের কুড়িগ্রাম কারাগারে পাঠায় পুলিশ। 

চুরির মূল হোতা হিসেবে অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলীকে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে সাময়িক বরখাস্ত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে গ্যারেজে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে অ্যাম্বুলেন্স।

২০২১ সালের ১১ এপ্রিল অ্যাম্বুলেন্স চালক একাব্বর আলী কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসলেও বরখাস্ত করা ওই চালক দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালার নিয়ম নেই বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে চালক না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত ফুলবাড়ী উপজেলার তিন লাখেরও বেশি মানুষ।

হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তার স্বজনরা জানায়, হাসপাতালে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক না থাকায় আড়াই গুণ বেশি টাকা দিয়ে আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে উন্নত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বাইরে যেতে হয়। সরকার এত দামি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছে, কিন্তু চালক না থাকায় আমরা সেই সুবিধা পাচ্ছি না।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি উত্তম কুমার মোহন্ত জানান, হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন।কিন্তু চালক না থাকার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে রোগীর স্বজনরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাই ফুলবাড়ী উপজেলা কমপ্লেক্সে দ্রুত একজন অ্যাম্বুলেন্স চালক দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সুমন কান্তি সাহা বলেন, আমার এই হাসপাতালে জয়েন করার চার মাস হয়েছে। মামলাজনিত কারণে অ্যাম্বুলেন্সের চালক নেই। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মো. মঞ্জুর-এ-মুর্শেদ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রেপুটেশনে এখানে একজন চালক দেওয়া যায় কি না সে বিষয়ে আমরা জোর আলোচনা চালাচ্ছি।

জুয়েল রানা/এসপি