একজন ছিন্নমূল নারী এগিয়ে এলেন। সামনে রাখা ফুটবলে লাথি মারলেন। বলটি সোজা গিয়ে দাঁড় করে রাখা তিনটি সয়াবিন তেলের বোতলের একটিতে লাগল। সঙ্গে সঙ্গে তিনি উপহার হিসেবে পেয়ে গেলেন ওই বোতলটি। মুখে ফুটে উঠল বাঁধভাঙা হাসি।

এরপর বাঁ হাতে লাঠিতে ভর করে একজন বৃদ্ধা এলেন। তিনি প্রথমবার বলটি বোতলে লাগাতে পারলেন না। দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়ে বোতলে বল লাগিয়ে তিনিও এক বোতল উপহার পেলেন। এতে তিনি প্রায় কেঁদেই দেন।

এভাবে একে একে নারী-পুরুষসহ ১২ জন জিতেছেন সয়াবিন তেলের বোতল। আর এ মুহূর্তে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পণ্যটি জিতে যেন তারা পেলেন সোনার হরিণ। তাই উচ্ছ্বাসভরে ফিরে গেলেন বাড়িতে।

উদ্যোগটি ছোট্ট ও ব্যতিক্রম হলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুড়িয়েছে বেশ প্রশংসা। এমন কর্মকাণ্ডের একটি ভিডিও ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন বিপ্লব হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি নিজ উদ্যোগে বন্ধু-ছোট ভাইদের সঙ্গে নিয়ে এই কাজের ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন।

বিপ্লব হোসেন জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার পুনট পাঁচগ্রামের আব্দুল জলিল ফকিরের ছেলে। তিনি বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। বিপ্লব পড়াশোনার পাশপাশি নাচও করেন।

বিপ্লব হোসেন ও তার সহ-আয়োজকরা

বিপ্লব হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার কাছে কিছু টাকা ছিল। হঠাৎ মনে হলো অসহায়কে সহায়তা করি। ভাবলাম, সহায়তা করলে যদি কেউ না নেয়? তাই ভিন্ন উদ্যোগে উপহার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। বিষয়টি আমার বন্ধু ও ছোট ভাইদের সঙ্গে শেয়ার করি। তারাও রাজি হয়। এরপর সীমিত পরিসরে আনন্দদায়ক এ আয়োজন করি।

তিনি আরও বলেন, রোববার বিকেল ৫টার দিকে বগুড়া শহরের রেলস্টেশন সড়কে ফুটবলে লাথি মেরে সয়াবিন তেলের বোতল জেতার আয়োজন করি। প্রতি বোতলে এক লিটার সয়াবিন তেল ছিল। যেহেতু আমাদের সীমিত আয়োজন, এ জন্য ১২ জনকে জয়ী করি। এতে যারা সয়াবিন তেল জিতেছেন, তাদের চোখেমুখে যে আনন্দ দেখেছি, তা এক অন্যরকম পাওয়া আমার কাছে। ভবিষ্যতেও এমন আয়োজন অব্যাহত রাখতে চাই।

চম্পক কুমার/এনএ