‘আমাদের কেউ মানুষ বলে মনে করত না। আমাদের দেখলে ঘৃণায় ছি ছি করত। অনেকে তো আবার কুরুচিপূর্ণ, অশালীন মন্তব্য করত। এসবের শিকার হয়ে মনে হত আমরা এ সমাজের কিছুই না, কোনো অধিকার নেই আমাদের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে আমরা আনন্দিত ও আবেগ আপ্লুত। ঘর হাতে পেয়ে মনে হচ্ছে আমরাও এই সমাজের একটা অংশ।’

কথাগুলো বলছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার জমি ও ঘর পাওয়া বরগুনার তৃতীয় লিঙ্গের চায়না।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বরগুনার খাজুরতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বরগুনায় ২২ জন তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী উপহারের ঘর পেয়েছেন। এতে খুশি তারা।

তৃতীয় লিঙ্গের চায়না বলেন, হিজড়া হয়ে জন্মানোর দায়ে আমাকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল অনেক অল্প বয়সে। একেক বয়সে একেক জায়গায় থেকে জীবনের অধিকাংশ সময় পার করে দিয়েছি। ধাপে ধাপে সবখানে লাঞ্ছনা ও অবহেলার শিকার হয়েছি। তবে এবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে মনে হচ্ছে আমরাও মানুষ, আমরাও এই সমাজেরই অংশ। আমরাও সম্মান ও ভালোবাসা পেতে পারি।

বরগুনার তৃতীয় লিঙ্গের দলনেতা চায়না জানান, আগামীতে কৃষিকাজ করার পাশাপাশি একটি গরুর খামার করে জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করবেন তারা। বিউটি পার্লার করে বাকি জীবনটা চালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেও অনেকে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর পেয়েছে জেলার ভিক্ষুক, ভূমিহীন, গৃহহীন ও তৃতীয় লিঙ্গের ৪২২ জন। তাদের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য বিভিন্ন আয়বর্ধক প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এখানকার কারোরই আর্থিক অভাব অনটনে থাকতে হবে না বলে আমরা আশা করছি।

প্রসঙ্গত, বরগুনার ৬ উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ২৩২টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭৯৩টি এবং তৃতীয় পর্যায়ে ৭২৫টি ঘরের মধ্যে ৪১১টি ঘরের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সদর উপজেলার খাজুরতলায় ৫০টি ঘর হস্তান্তরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

খান নাঈম/আরএআর