কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দলদলিয়ার কাজীপাড়া গ্রামের মেসার্স এমবিইউ ব্রিকস নামে একটি ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় কৃষকদের শতাধিক বিঘা জমির ফসল, আম-কাঁঠাল, জাম, লিচু, সুপারি, নারিকেলসহ শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তরা বিষয়টি দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন। 

ইটভাটা থেকে ইট পোড়ানোর বিষাক্ত গ্যাস ছেড়ে দেওয়ায় পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এতে নষ্ট হচ্ছে ওই এলাকার শতাধিক বিঘা জমির ফসল, আম-কাঁঠাল, জাম, লিচু, নারিকেলসহ শাকসবজি। ধোঁয়ার কারণে পচন ধরে ঝরে পড়ছে আম-কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফল।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পচে ঝড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে বাগানের আম ও কাঁঠাল। ধোঁয়ার কারণে ধানগাছ লালচে হয়ে গেছে। পাতা কুঁকড়ে গেছে। ধানের শিষ চিটা হয়ে গেছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। ঋণ নিয়ে ফসল চাষ করায় তা পরিশোধ নিয়েও চিন্তিত তারা।

এ ব্যাপারে নুর ইসলাম নামে এক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক বলেন, আমার বাড়ির ১শ মিটারের মধ্যে মেসার্স এমবিইউ ব্রিকস নামে এই ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে প্রতি বছরেই আমার বিভিন্ন প্রকার ফসল নষ্ট হচ্ছে। ভাটার মালিককে অনেক বার বলার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

এদিকে ক্ষতি শুধু ধানের হচ্ছে না, বাড়ির বিভিন্ন প্রকার গাছেই ফল ধরছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আকুল আবেদন তারা যেন এই বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে আমাদের মুক্তির ব্যবস্থা করে দেয়। 

নজরুল ইসলাম নামে অন্যএকজন বলেন, ভাটার চারিদিকে যত প্রকার ফসলি জমি আছে সবারই ক্ষতি হচ্ছে। আমরা এলাকার সবাই ভাটার মালিককে অনেক বার বলেছি তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এখানে প্রতিবিঘা জমিতে ধান হতো ১৫-১৬ মণ, এখন হচ্ছে ৭-৮ মণ। তাহলে এত বড় ক্ষতি হলে আমরা কীভাবে বাঁচব বলেন।

স্থানীয় বিউটি বেগম নামে এক নারী বলেন, এই ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে ছোট ছোট বাচ্চারা কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এখানকার অনেক শিশুর অ্যাজমা পর্যন্ত হয়েছে। আমার বাচ্চারও কাশি ভালো হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে মেসার্স এমবিইউ ব্রিকস নামে ইটভাটার মালিক আব্দুল মালেককে মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার জানান, আমার কাছে তো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জুয়েল রানা/আরআই