গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া এলাকায় জিম অ্যান্ড জেসি কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা এপ্রিল মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস না পেয়ে শনিবার থেকে কারখানায় অবস্থান ধর্মঘট করছেন। বেতন-বোনাস না পাওয়ায় শ্রমিকরা শনিবার রাতে কারখানার ভেতরেই রাতযাপন করছেন এবং পানি-বিস্কুট খেয়ে রোজার সাহরি ও ইফতার করেছেন।

রোববার (১ মে) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ নিয়ে কারখানায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ চলছিল। 

কারখানার শ্রমিক জাহিদ, রায়হান, স্বপ্না জানান, আমরা এ কারখানায় সাড়ে চার বছর ধরে চাকরি করছি। শনিবার লাঞ্চের পর এপ্রিলের বেতন ও ঈদ বোনাস দেওয়ার কথা ছিল। সে জন্য সকালে আমরা সাজগোজ করে এসে কাজে যোগ দিই। ভেবেছি দুপুরের পর বেতন-বোনাস নিয়ে আমরা বাড়ি যাব। এমন আনন্দ কাজ করছিল সবার মনে। কিন্তু কিছু বুঝতে না দিয়ে দুপুরের আগেই কারখানার কর্মকর্তারা আমাদের বেতন-বোনাস না দিয়ে পালিয়েছেন।

জানা যায়, দুপুরের পর শ্রমিকরা যখন বেতন-বোনাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন, তখন তারা জানতে পারেন তাদের পাওনা দেওয়ার মতো কারখানার কেউ নেই। অথচ সকালে তারা সবাই কারখানায় ছিলেন। এ কথা শুনে শ্রমিকদের ঈদের আনন্দে ছেদ ঘটে, তাদের মধ্যে অসন্তোষ শুরু হয়। শুরু হয় বিক্ষোভ।

শনিবার সন্ধ্যায়ও বেতন-বোনাস না পেয়ে তারা দোকান থেকে বিস্কুট-পানি খেয়ে ইফতার করেন এবং উত্তরায় মালিকের বাসায় যান। সেখানেও তাকে না পেয়ে তারা রাত আড়াইটার দিকে কারখানায় ফিরে যান এবং সেখানেই রাত যাপন করেন। পানি ও শুকনা খাবার খেয়ে তারা রোজা (সাহরি) রাখেন। রোববার সকালেও কারখানা অবস্থান করছেন।

গাইবান্ধার আজিজুল হক জানান, বেতন-বোনাস নিয়ে গ্রামের বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করব এমনটাই আশা ছিল। কিন্তু কারখানায় পাওনা নিতে গিয়ে আমাদের সেই আনন্দটাই মাটি হয়ে গেল। স্ত্রী-সন্তানেরা আমার জন্য অপেক্ষা করছি। আর আমি কারখানায় বেতন-বোনাসের জন্য খেয়ে না-খেয়ে বসে আছি।

জিম অ্যান্ড জেসি কম্পোজিট লিমিটেড কারখানার হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন জানান, কারখানায় অর্থ-সংকটের কারণে সাবলেটে কাজ করিয়ে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু এবার ঈদের আগে ব্যাংকিং সমস্যার কারণে টাকা তুলতে না পারায় কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দিতে পারেনি।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মো. জাকির হাসান বলেন, আমরাও মালিককে খুঁজছি। কিন্তু তাকে পাচ্ছি না। তাই রোববার দুপুরের মধ্যে বিকল্প উপায়ে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

শিহাব খান/এনএ