ঠাকুরগাঁওয়ের ৫ উপজেলায় তাণ্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। এতে লন্ডভন্ড হয়েছে জেলার শতাধিক গ্রাম। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের। বৃষ্টি কম হলেও ঝড়ের প্রচণ্ড গতি ছিল। ঝড়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিদুৎবিহীন সময় অতিক্রম করছে জেলাবাসী। 

গত শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটার দিকে হালকা বৃষ্টি হওয়ার পর থেমে যায়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় জেলার বিভিন্ন গ্রাম। ঝড়ে রাস্তার উপরে উপড়ে পড়েছে শতবর্ষী বহু গাছ। জেলার বিভিন্নস্থানে ছিঁড়ে গেছে বৈদুত্যিক তারগুলো। কোথাও কোথাও পড়ে গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো। এতে বিদুৎ না থাকায় মোমবাতি জ্বালিয়ে অন্ধকার দূর করছে জেলাবাসী। 

সরেজমিনে ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন বাজারে গেলে দেখা যায়, দোকানে মোমবাতি পাওয়া যাচ্ছে না। পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে তিনগুনেরও বেশি দামে। 

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার হাজীপাড়ার রিকশাচালক আবুল কাশেম বলেন, পুরো শহরে হেঁটে হেঁটে মোমবাতি খুঁজলাম। একটি মাত্র দোকানে পেয়েছিলাম তাও দাম ২০ টাকা। ৫ টাকার মোমবাতি ২০ টাকা দাম চাওয়ায় কিনিনি। পরে আরও খুঁজে না পাওয়ায় সেই দোকানে গিয়ে দেখি সেটাও নেই। এখন সারারাত কীভাবে অতিক্রম করব। কীভাবে সেহরী খাব ভেবে পাচ্ছি না। 

ঠাকুরগাঁও রোড এলাকার স্কুলশিক্ষক পারভেজ হাসান বলেন, বাসায় আইপিএস ছিল সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। রোড বাজারে মোমবাতি কিনতে আসলাম। একটা মোমবাতি কিনতে পেরেছি ২০ টাকায়। একটা দিয়ে কেমনে রাত যাবে। তবুও কিছু করার নেই। এভাবে একটা মোমের আলো দিয়েই রাত কাটিয়ে নিতে হবে। 

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার কালিবাড়ি বাজারে মুদি দোকানি ফারুক হাসান বলেন, কয়েক বক্স মোমবাতি ছিল সকালের দিকে। দুপুর হতে হতে সব বিক্রি হয়ে গেছে। এখন আর স্টকে কোনো মোমবাতি নেই। নিজের দোকানের কর্মচারীদের জন্য রাখতে পারিনি মোমবাতিগুলো। 

বালীয়াডাঙ্গীর উপজেলার লাহিড়ী বাজারের জিয়াউর রহমান বলেন, কোনো দোকানে মোমবাতি পাওয়া যাচ্ছে না। মোবাইলগুলোতেও চার্জ নেই। যে দোকানগুলোতে মোমবাতি পাওয়া যায় তারা চড়া দাম ছাড়া বিক্রি করছেন না। ৫ টাকার মোমবাতি ১৫-২০ টাকাও পায় না। বিদুৎ কবে আসবে সেটাও ঠিক নেই৷ 

ঠাকুরগাঁও পল্লী বিদুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু আশরাফ মো. ছালেহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল শনিবার আমরা তার সংযুক্তের কাজ করতে পেরেছি। কালবৈশাখীর তাণ্ডবে আমাদের ৯৫টি খুঁটি ভেঙেছে। আজ রোববার সেগুলো নিয়ে সকাল ৭টা থেকেই কাজ শুরু হয়ে গেছে। আশা করছি আজকের মধ্যে বিদুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।

এম এ সামাদ/এমএএস