গাজীপুরের শ্রীপুরে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমন্ত স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে থানায় হাজির হয়েছেন এক স্ত্রী। পরে ঘরে তালাবদ্ধ গুরুতর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

সোমবার (৩ মে) দিবাগত মধ্যরাতে শ্রীপুর পৌর এলাকায় কেওয়া দক্ষিণখণ্ড গ্রামের চেয়ারম্যানবাড়ি মোড় এলাকায় আমান উল্ল্যাহ্ আমানের মালিকানাধীন ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী যুবক মো. শরীফ (৩১) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে। অভিযুক্ত হনুফা (৩০) একই জেলার শ্রীপুর উপজেলার গাজিয়ারন গ্রামের আবু হানিফ বেপারীর মেয়ে। শরীফের দ্বিতীয় স্ত্রী হনুফা। ৮/৯ মাস আগে প্রথম স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার পর হনুফাকে বিয়ে করেন শরীফ।

ভুক্তভোগী যুবকের বাবা আলা উদ্দিন জানান, প্রথম স্ত্রীর সাথে ৩ বছর সংসার করার পর তাদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। পরে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর থেকে শরীফের সাথে তাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। তাকে বাড়িতেও ঢুকতে দিতাম না। বছরখানেক ধরে আমাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। ওরা যে বিয়ে করছে তা আমরা জানতাম না। আজ সকালে তার এমন খবর শুনে হাসপাতালে যাচ্ছেন বলে সে জানায়।

বাড়ির মালিক আমান উল্ল্যাহ্ আমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন জানান, দুই দিন আগে গত ১লা মে রোববার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তার বাড়িতে একটি টিনশেড ঘর ভাড়া নেয় শরিফ। তখন জানানো হয়েছিল, স্বামী শরিফ জয়দেবপুর এলাকায় চাকরি করেন পাশাপাশি স্ত্রী ঘরে সেলাইয়ের কাজ করেন। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের কলহ আছে কি না তা তাদের জানা ছিল না। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমাদের ঘুম থেকে ডেকে তুলে পুলিশ। তাৎক্ষণিক বাড়ির মালিক আমান উল্ল্যাহ্ পুলিশের সহযোগিতায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজান জানান, তিনি রাত্রিকালীন সময়ে ওই এলাকায় ডিউটিরত ছিলেন। এ সময় থানার ডিউটি অফিসার তাকে মুঠোফোনে জানান, স্বামীর গোপনাঙ্গ কেটে নিয়ে এক নারী থানায় হাজির হয়েছেন এবং গুরুতর অবস্থায় কেওয়া পূর্ব খণ্ড গ্রামের একটি ঘরে স্বামীকে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে এসেছেন। পরে ওই নারীর দেওয়া তথ্যমতে ঘরের তালা ভেঙে স্বামী শরীফকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। 

অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এদিকে অভিযুক্ত নারী হনুফা বুকে ব্যাথা অনুভব করায় তাকেও শ্রীপুর থানা থেকে চিকিৎসার জন্য শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। বুকের ব্যাথা না কমায় তাকেও গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

শিহাব খান/আরআই