‘কিছু কিছু গল্প থাকে যা বলা যায় না। কোনো কোনো ছবি কাউকে দেখানো যায় না। অনেক প্রাপ্তির জীবনেও অনেক হারানোর গল্প থাকে। দুনিয়ার অনেক কিছু ফিরে পাই, কিন্তু প্রিয় মা-বাবাকে আর ফিরে পাই না।’ 

সিলেট নগরের মানিকপীর (রহ.) কবরস্থানে মা-বাবার কবর জিয়ারতে এসে এভাবেই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেন বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত আব্দুল গফুর নামে এক ব্যক্তি।

মঙ্গলবার (৩ এপ্রিল) সকালে ঈদুল ফিতরের জামাতের পর সিলেটের দরগাহ মাজার সংলগ্ন কবরস্থান ও মানিকপীর কবরস্থানে মৃত ব্যক্তিদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে কবর জিয়ারত করতে দেখা যায় তাদের স্বজনদের। 

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। সাধারণভাবে ঈদ মানে হচ্ছে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের এক চিরায়ত প্রথা। এসব কিছুর পরেও কবরস্থানে অনেক আপনজন, পরিজনদের  নীরব উপস্তিতি ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টা থেকেই কবরস্থানে আসতে থাকে মানুষ। চলে মৃত স্বজনদের তাদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত। এ সময় অনেককেই চোখের পানি ফেলে দুই হাত তুলে প্রিয়জনদের জন্য মোনাজাত করতে দেখা যায়। আবার কাউকে কোরআন তিলাওয়াত করতেও দেখা যায়।

কবর জিয়ারতে আসা সিলেট নগরীর বাগবাড়ির বাসিন্দা সুমিল আহমদ বলেন, আমাদের অনেক প্রিয়জন আছে যারা ইতিমধ্যে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন, হয়েছেন কবরবাসী। তাদের জন্য দোয়া করতে মূলত এখানে আসা।

নগরীর দক্ষিণ সুরমা এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন তার বাবার কবর জিয়ারত করতে দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন শাহজালালের মাজার সংলগ্ন কবরস্থানে। তিনি বলেন, আমি প্রায় সময় আমার সন্তানদের নিয়ে এখানে কবর জিয়ারতে আসি। এই মাটিতে আমাদের পূর্ব-পুরুষরা শুয়ে আছেন। বাবা-চাচাদের সঙ্গে ছোটবেলায় আমার দাদা-দাদিদের কবর জিয়ারতে এখানে আসতাম। আজ ঈদের একটি বিশেষ দিনে ছেলেদের নিয়ে এসেছি, যাতে আমি মারা গেলেও তারা তাদের সন্তানদের নিয়ে এখানে আসে।

মাসুদ আহমদ রনি/আরএআর