নোয়াখালীতে প্রতারণা করে  অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সর্বস্ব হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে নারীসহ দুই প্রতারককে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (১৩ মে) রাতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। 

এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৪টি মোবাইল ফোন, চারটি লিখিত স্ট্যাম্প, বিভিন্ন ব্যাংকের সাতটি স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক, ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত একটি আংটি উদ্ধার করা হয়। 

আটককৃতরা হলেন- নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ইউনুছ পাটোয়ারী বাড়ির মৃত আব্দুল লতিফ চৌধুরীর ছেলে টিপু সুলতান চৌধুরী (৪৪) ও নোয়াখালীর সুধারাম মডেল থানা এলাকার পশ্চিম রাজারামপুর গ্রামের সেলিমের বাড়ির সোহেল রানার স্ত্রী তাজনাহার আক্তার রত্না (৩৪)।

শনিবার (১৪ মে) দুপুরে নিজ সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, আটক টিপু সুলতান চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে সব হাতিয়ে নিচ্ছে। মূলত তিনি টার্গেট করে মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে আরেক প্রতারক তাজনাহার আক্তার রত্নার হাতে দিতো। তারপর তিনি মিসড কল দিতেন। যারা মিসড কল ব্যাক করতেন তাদেরকে বিভিন্ন ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে অর্ধনগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে সর্বস্ব হাতিয়ে নিতেন। 

পুলিশ সুপার বলেন, এক ভুক্তভোগী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় অভিযোগ জমা দিলে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেনকে কৌশলে বাসায় ডেকে নিয়ে অর্ধনগ্ন ভিডিও ধারণ করে টাকা দাবি করেন প্রতারকরা। তখন আড়াই লাখ টাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়ার চুক্তি হয়। পরে আমানিয়া হোটেলে ১ লাখ টাকা দেওয়ার সময় টিপু সুলতানকে আটক করা হয়। তারপর তার বাসায় অভিযান চালিয়ে ২৪টি মোবাইল ও ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত স্বর্ণের আংটিসহ চেক উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, আসামি টিপু সুলতানকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের নারী সদস্য তাজনাহার আক্তার রত্নাকে আটক করা হয়। তার স্বামী সোহেল রানাও উক্ত প্রতারক চক্রের সঙ্গে জড়িত। আসামি টিপু সুলতান চৌধুরীর ব্যবহৃত মোবাইল সেট পর্যালোচনা করে আটককৃত নারীর সঙ্গে জোরপূর্বক অভিযোগকারীর আপত্তিকর স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্রসহ জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে লিখিত নেওয়ার ভিডিও পাওয়া যায়। বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুধারাম মডেল থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। 

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আকরামুল হাসান, সুধারাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হাসিব আল আমিন/আরএআর