বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, অবৈধ সরকার বাংলাদেশকে বাকশালী মোড়কে সাজানোর ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেবে না এ দেশের জনগণ। সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমপি-মন্ত্রীরাই সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি, অর্থপাচার ও অপকর্মের কথা স্বীকার করতে শুরু করেছে।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছিল। এখন সময় এসেছে তারেক রহমানের নেতৃত্বে নিশিরাতের অবৈধ সরকারকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার। 

শনিবার (১৪ মে) বিকেলে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারি নেতাকর্মীদের সিন্ডিকেটের কারণে দেশে তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য সীমাহীন বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লোখ করে সেলিমা রহমান বলেন, সারাদেশে মজুতদারদের আড়তে হানা দেওয়ার পর লাখ লাখ লিটার তেল জব্দ করা হচ্ছে। ওইসব মজুতদার-সিন্ডিকেট সদস্যরা কারা? কী তাদের রাজনৈতিক পরিচয়? তা জনগণের জানতে-বুঝতে বাকি নেই। এইসব আওয়ামী সিন্ডিকেটের বিচার এক দিন এই দেশের মাটিতে হবে।

সেলিমা রহমান আরও বলেন, দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ রাস্তায় নেমে আসতে শুরু করেছে। সেদিন আর বেশি দুরে নয়; যেদিন হাসিনা সরকার গণপ্রতিরোধের মুখে পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। জনগণ যখন বিক্ষুদ্ধ হয় তখন আর তাদেরকে প্রতিরোধ করা যায় না। এই দেশের অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস তা-ই বলে।

বিএনপির ৪০ লাখ নেতাকর্মী গায়েবি মামলার আসামি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেত্রী বলেন, গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হেলমেট বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেখা যায় অথচ মামলা হচ্ছে বিএনপির বিরুদ্ধে। ৭১ থেকে ৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যে চেহারা ছিল আবারও তাদের সেই চেহারা উন্মোচিত হয়েছে। 

তাদের হামলা, মামলা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও লুটপাটের একই চিত্র জনগণ দেখছে। সাংবাদিকরা তাদের অপকর্ম ও দুঃশাসনের কথা দেখলেও লিখতে পারছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। এই লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে জনগণকে সাথে নিয়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে এবং মহানগর সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন ও জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পির পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ মো. শামীমুর রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, সাহারুজ্জামান মোর্তজা, রবিউল ইসলাম রবি, আয়শা সিদ্দিকা মানি, জেলা আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, তরিকুল ইসলাম জহির, আবু হোসেন বাবু, রেহেনা ঈসা, অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবা, মাহবুব হাসান পিয়ারু, আশরাফুল আলম নান্নু, শামীম কবির, একরামুল হক হেলাল, গালিব ইমতিয়াজ জাহিদ, মুজিবর রহমান, উজ্জল কুমার সাহা, অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ছন্দা, কবির হোসেন মোল্লা, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, তাজিম বিশ্বাস, সজীব তালুকদার প্রমূখ।

সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন হাফেজ মো. জাহিদুর রহমান।

মোহাম্মদ মিলন/আরআই