সদ্য শেষ হওয়া রমজান মাসে সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও তরমুজের দাম ছিল চড়া। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তরাও তরমুজ কেনা থেকে দূরে ছিলেন। কম দামে তরমুজ ছাড়েননি ব্যবসায়ীরাও। তবে মাত্র ২০ দিনের ব্যবধানে সেই তরমুজ এখন ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, রমজানের প্রথম দিকে সিলেটে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান শুরু করলে তারা তরমুজ পিস হিসেবে বিক্রি করেন। পুরো রমজানেই ৩০০ টাকার তরমুজ প্রায় ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এখন ২০০ টাকা দিয়েও তরমুজ কিনছেন না সাধারণ ক্রেতারা।

নষ্ট হওয়া তরমুজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন আড়ৎদাররা। কেউ কেউ এসব তরমুজ ফেলছেন ডাস্টবিনে। আবার কেউ কেউ ফেলে দিচ্ছেন সুরমা নদীতে।

সরেজমিনে শনিবার (১৪ মে) সিলেট নগরীর অন্যতম পাইকারি ফলের বাজার কদমতলীতে গিয়ে দেখা যায়, আড়ৎদাররা তরমুজের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। তবে কিনছেন না পাইকাররা। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা। মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে অন্তত কোটি টাকার তরমুজ নষ্ট হওয়ার পথে রয়েছে। অনেক তরমুজে পচন ধরতে শুরু করেছে। আবার নষ্ট হওয়া তরমুজ নিয়েও বিপাকে পড়েছেন আড়ৎদাররা। কেউ কেউ এসব তরমুজ ফেলছেন ডাস্টবিনে। আবার কেউ কেউ ফেলে দিচ্ছেন সুরমা নদীতে।

ফল মার্কেটের আড়ৎদার আখরই মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি গত সপ্তাহে প্রায় ৫ লাখ টাকার তরমুজ কিনেছিলাম। পাইকারদের আগ্রহ না থাকায় এখন বেশ লোকসানে পড়েছি। কম দামে অফার দিয়েও বিক্রি করতে পারছি না। লোকসানে অনেক তরমুজ বিক্রি করেছি।

একই আড়তের আরেক ব্যবসায়ী জমির মিয়া বলেন, ঈদের পর থেকেই তরমুজ বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহে ক্রেতাদের আগ্রহ কমে যাওয়ায় আমরা বেশ লোকসানে পড়ে গেছি।

নগরীর রিকাবী বাজারের খুচরা ফল ব্যবসায়ী লাহিন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের পর আমি ৮০ হাজার টাকার তরমুজ কিনেছিলাম। এই তরমুজ কেনার পর থেকে সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এতে তরমুজে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। ৮০ হাজার টাকার তরমুজে যেখানে আমার লাভ হওয়ার কথা ছিল কয়েক হাজার টাকা, সেখানে আমি প্রায় ৩৫ হাজার টাকা লোকসানে পড়েছি। আর তরমুজ বিক্রি করবেন না বলেও জানান তিনি।

সিলেট নগরীর মধুশহীদ এলাকার বাসিন্দা জাহেদ আহমদ রুবেল বলেন, পরিবারে চাহিদা থাকায় আমি রমজানে একটি তরমুজ কিনেছিলাম ৪০০ টাকায়। ওই সময় যে সাইজের তরমুজ কিনেছিলাম তা এখন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে দেড়শ টাকার মধ্যে।

নগরীর রিকাবী বাজারের খুচরা ফল ব্যবসায়ী লাহিন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঈদের পর আমি ৮০ হাজার টাকার তরমুজ কিনেছিলাম। এর পর থেকে সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। এতে তরমুজে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। আমি প্রায় ৩৫ হাজার টাকা লোকসানে পড়েছি। 

সিলেট নগরীর আরেক বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রমজানে অনেক গরম পড়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে আমার মতো অনেকেই তরমুজ কিনতে পারেননি। রমজানের গরমে যখন তরমুজ কিনতে পারিনি, তখন বৃষ্টির দিনে তরমুজ কেন কিনব। এতে অন্তত ব্যবসায়ীদের শিক্ষা হবে।

মাসুদ আহমদ রনি/আরএআর