সুনামগঞ্জে টানা ৯ দিন বৃষ্টিপাত চলছে। এ ছাড়া ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতেও এক সপ্তাহ ধরে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীসহ সব শাখা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে পুরো জেলার নিম্নাঞ্চল।

মঙ্গলবার (১৭ মে) সুনামগঞ্জ সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সুনামগঞ্জ শহরের নবীনগর, উকিলপাড়া, তেঘরিয়াসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় সুরমা নদীর পানি ঢুকে পড়েছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মেঘালয়ে আজ ও কাল ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে সুনামগঞ্জের সুরমাসহ সবকটি শাখা নদী ও হাওরের পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা, দোয়ারাবাজার ও বিশ্বম্ভরপুরসহ সব উপজেলার প্রায় সবকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে প্লাবিত হয়ে পড়েছে ছাতক উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

সম্প্রতি জেলায় ১৫টিরও বেশি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে পানি ঢোকায় তড়িঘড়ি করে ধান কেটে নিয়েছিলেন যেসব কৃষক, তারাও নতুন বিপদের সম্মুখীন হয়েছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সুনামগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম জানিয়েছেন, গত দুই দিনে নদ-নদীগুলোয় পানির চাপ অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায় সুনামগঞ্জের গজারিয়া নদীর রাবার ড্যামের পাম্প হাউস নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

এখন পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, ভারতের মেঘালয়ে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। ইতোমধ্যেই জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। আজ নদ-নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জ ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকায় বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

মাসুদ আহমদ রনি/এনএ