পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে সিলেট জেলা পানিতে ভাসছে। ফসলি জমি, বাসাবাড়ি ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানিতে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ফলে প্লাবিত এলাকার মানুষজন ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে।

মঙ্গলবার (১৭ মে) সুরমা নদীর পানি উপচে নগরীতে প্রবেশ করায় বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাস্তাঘাট ডুবে যায়। বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অনেক অফিসে পানি ঢুকে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

সিলেট নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো- শাহজালাল উপশহর, মাছিমপুর, লালাদিঘির পাড়, কলাপাড়া, লামাপাড়া, ঘাসিটুলা, যতরপুর, সোবহানিঘাট, কালীঘাট, ছড়ারপাড়, শেখঘাট, তালতলা, মাছিমপুর, পাঠানটুলা, লন্ডনি রোড, মেজরটিলা, মোল্লাপাড়া, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড, মোমিনখলা। আকস্মিক বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দারা। এ অবস্থায় তাদের জন্য এগিয়ে আসে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। পানিবন্দি মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশেনের সাত ওয়ার্ডে খোলা হয় ১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র।

এদিকে আশ্রয়কেন্দ্র খোলার খবরে ভিড় করছে পানিবন্দী মানুষ। পরিবার-পরিজন ও মূল্যবান জিনিসপত্র ও টাকা-পয়সা নিয়ে তারা হাজির হচ্ছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।

সিলেট নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডের মিরাবাজার কিশোরীমোহন বালক উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে কথা হয় রহিমা বেগমের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে সাময়িকভাবে আশ্রয় নিয়েছি ঠিকই কিন্তু মন পড়ে আছে আমার সেই ছোট্ট ঘরে। যদি ঘরে হাঁটুসমান পানিও থাকত, তাহলে ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতাম না।

মির্জাজাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আবুল হোসেন নামে একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, নগরীর মাছুদিঘির পাড়ে আমার বাসা। বৃষ্টি ছাড়াই যেভাবে পানি ঘরে ঢুকে পড়েছিল, তাতে বউ-বাচ্চা নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। পরে আশ্রয়কেন্দ্রের খবর পেয়ে পরিবার নিয়ে এখানে আসছি।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত সন্তু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের সিটি কর্পোরেশন থেকে আপাতত এই আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আশ্রয় নেওয়া এসব মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে।

মাসুদ আহমদ রনি/এসপি