লক্ষ্মীপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সামনের রাস্তায় শিল্পি আক্তার নামে এক প্রসূতির সন্তান প্রসবের ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ মে) দুপুরে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. আশফাকুর রহমান মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উপ-পরিচালক জানিয়েছেন, বুধবার (১৮ মে) রাতেই পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের জেলা কনসালটেন্ট ডা. আক্তার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যরা হলেন, সদর উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা নাজমুল হাসান ও কমলনগর উপজেলার কর্মকর্তা সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন। তিন কর্ম দিবসের মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. আক্তার হোসেন বলেন, চিঠি পেয়েছি। ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের চিঠি পাঠানো হবে। তিন কর্মদিবসের মধ্যেই সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী প্রসূতি শিল্পির মা নুরজাহান বেগমের অভিযোগ, প্রসব ব্যথা উঠলে বুধবার দুপুরে শিল্পিকে সদর হাসপাতাল সংলগ্ন সদর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। মাগরিবের নামাজের আগে তার ব্যথা বেড়ে যায়। সেখানে দায়িত্বে থাকা স্টাফ রৌশন আরা সন্ধ্যায় ইফতার করতে যান। এসময় কর্তব্যরত আয়া শারমিন আক্তার স্বাভাবিক প্রসব হবে না বলে প্রসূতিকে বাইরে সদর হাসপাতাল কিংবা কোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে সিজার করতে বলেন। একপর্যায়ে প্রসূতিকে বের করে দেওয়া হয়। এতে বের হতেই রাস্তায় পড়ে যায় প্রসূতি। পরে রাস্তাতেই প্রকাশ্যে প্রসূতি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে রাখতে অনুনয় বিনয় করলেও আয়া তাদের কথা শোনেননি।

শিল্পি লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সমসেরাবাদের জোড়দিঘিরপাড় এলাকার ফল দোকানের শ্রমিক আজগর হোসেনের স্ত্রী। তারা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেরবেকি এলাকায় বাসা ভাড়া থাকেন।

শিল্পির মামাতো বোন রুনা আক্তার জানান, মা ও নবজাতক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। তাদের অবস্থা ভালো না। উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন। তারা এখন বাড়িতে আছেন, বিকেলে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হবে। আমি নিজেও আয়াকে বারবার অনুরোধ করেছি, কিন্তু তিনি তার কথায় অটল ছিলেন।

রাতে ডা. আশফাকুর রহমান মামুন জানিয়েছেন, তিনি নার্স, আয়া ও অন্যান্য রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই প্রসূতির স্বজনরাই সিজার করার জন্য চাপ দিয়েছে। নার্স ও আয়া বলেছিল স্বাভাবিক প্রসব হবে। কিন্তু প্রসূতির স্বজনরা তা মানতে নারাজ ছিলেন। এতে তারা নিজেরাই সিজার করার উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এমএএস