অভিযুক্ত স্বামী সাইফুল ইসলাম

হবিগঞ্জের মাধবপুরে মৌসুমী আক্তার (২১) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৯ মে) গৃহবধূর স্বামী সাইফুল ইসলাম ও শাশুড়ি বেদেনা খাতুনকে (৫০) গ্রেপ্তার করে মাধবপুর থানা পুলিশ। গত রোববার (১৫ মে) উপজেলার নোয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বুধবার রাতে মাধবপুর থানায় গৃহবধূ মৌসুমী আক্তার মাধবপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় স্বামী সাইফুল ইসলাম, শাশুড়ি বেদেনা খাতুন ও ননদ নাইমাকে আসামি করেন।

জানা যায়, তিন বছর আগে উপজেলার চৌমুহনী ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের মিজান মিয়ার মেয়ে মৌসুমী আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার বাঘাসুরা গ্রামের আব্দুল নুরের ছেলে সাইফুল ইসলামের বিয়ে হয়। চাকরির সুবাদে সাইফুল একসময় স্ত্রী, মা, বোনকে নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় ওঠেন। সাইফুল-মৌসুমীর রাব্বি নামে ১৮ মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

কয়েক মাস ধরে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ দেড় লাখ টাকা যৌতুকের জন্য মৌসুমীকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। কিন্তু মৌসুমীর দরিদ্র বাবা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ১৫ মে দুপুরে সাইফুল ক্ষিপ্ত হয়ে মৌসুমীকে মারপিট শুরু করেন। একপর্যায়ে ননদ নাইমা ও শাশুড়ি বেদেনা খাতুন মিলে মৌসুমীর বাঁ গালে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়।

ওই দিনই মৌসুমীর ১৮ মাসের শিশু সন্তানসহ তাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাবা মিজান মিয়া মেয়ের অবস্থা দেখে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

মৌসুমী মামলায় উল্লেখ করেন, বিয়ের পর থেকেই তাকে যৌতুকের জন্য মারধর করা হতো। ওই দিন বাবার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে চাপ দেয়। টাকা দিতে অস্বীকার করায় স্বামী, শাশুড়ি ও তার বোন মিলে মারধর করে গালে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেন।

মাধবপুর থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, মামলার পর সাইফুলকে লাখাই উপজেলার মুড়াকরি গ্রাম থেকে ও শাশুড়িকে নোয়াপাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এনএ