কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় আলোচিত শহিদুল ইসলাম ও নামদার আলী হত্যার দায়ে তিনজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

একই সঙ্গে তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন- মাহাতাফ বিশ্বাস, শরকত বিশ্বাস ও সলিম।

রোববার (২২ মে) বিকেলের দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা নওয়াপাড়া এলাকার পিয়ার আলীর ছেলে শহিদুল মেম্বার, একই এলাকার ওমর আলীর ছেলে চান্নু ও মজিবর রহমানের ছেলে বক্কার। 

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের দিকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দহকুলা নওয়াপাড়া এলাকায় সন্ত্রাসী সাদ্দাম গ্রুপের দৌরাত্ম্য ছিল। ওই সময় শহিদুল ইসলাম শহীদ ও একই এলাকার আনসার আলীর ছেলে নামদার আলী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকদের সঙ্গে উঠাবসা করত। সাদ্দামের সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন সন্দেহ করত যে শহিদুল ইসলাম তাদের বিষয়ে পুলিশকে তথ্য প্রদান করে। এ সন্দেহে ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আসামিরা শহিদুল ইসলাম ও নামদারা আলীকে তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে নিখোঁজ হয় শহিদুল ও নামদারা। পরে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। 

এ ঘটনায় তাদের পরিবার কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করলেও সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকির মুখে তারা মামলা করতে ব্যর্থ হয়। পরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলে ২০১০ সালের ১৯ মার্চ শহিদুল ইসলামের স্ত্রী মর্জিনা বেগম ৬ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের  ৭ মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে ২২ মে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিদের শাস্তির আদেশ দেন। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। 

আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী ঢাকা পোস্টকে বলেন, হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। এ মামলায় তিনজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। 

রাজু আহমেদ/এমএএস