যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক মো. হায়াতুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ সংক্রান্ত কাজে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করার অভিযোগ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 

সোমবার (২৩ মে) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ড. আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে হায়াতুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাজমুল হাসান, সদস্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. এ এস এম মুজাহিদুল হক, সদস্য সচিব পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আমিনুল হক। তদন্ত কমিটিকে অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ড. আহসান হাবীব।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী ড. আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক মো. হায়াতুজ্জামানের বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত কাজে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করার অভিযোগ পাওয়ায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাধারণ আচরণ, শৃঙ্খলা ও আপিল সংক্রান্ত বিধি মোতাবেক সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। 

তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অফিস আদেশে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করার কথা উল্লেখ করলেও মূল অভিযোগের বিষয়টি পরিষ্কার করেননি। তবে নাম না প্রকাশে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার জানিয়েছেন, চাকরি প্রার্থীর কাছে মুঠোফোনে অর্থ দাবির করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক মো. হায়াতুজ্জামান।

সূত্রে জানা গেছে, সোমবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাটা অপারেটরের নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবহারিক ও ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় চাকরি প্রার্থীদের মুঠোফোন বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ একজন চাকরি প্রার্থীকে মুঠোফোনে কথা বলতে দেখেন একজন পরীক্ষা পরিদর্শক। পরিদর্শক ফোনটি নিয়ে নম্বর চেক করে দেখেন চাকরি প্রার্থীর ফোনের অপর প্রান্তে রয়েছেন যবিপ্রবির জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক হায়াতুজ্জামান। 

পরীক্ষা পরিদর্শকগণ প্রার্থীর মুঠোফোনের কল রেকর্ডটি উদ্ধার করেন। তাক্ষণাৎ ওই প্রার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয়। মুঠোফোনের রেকর্ডিং ও পরবর্তীতে চাকরি প্রার্থীর জিজ্ঞাসাবাদে এমন কিছু তথ্য উঠে আসায় বিদ্যালয় প্রশাসন ওই কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে। 

এ বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, চাকরি প্রার্থীর ফোনের রেকর্ডিং ও প্রার্থীর জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় এখানে প্রার্থীর সঙ্গে কর্মকর্তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর রিজেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত যবিপ্রবি রেজিস্ট্রার দপ্তরের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক হায়াতুজ্জামান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

জাহিদ হাসান/এমএএস