টেপরেকর্ডারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ বাজানোর কারণে সফিউল ইসলাম নামে এক আনসার সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চাকরিচ্যুত হয়ে ১৮ বছর ধরে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। 

চাকরি ফিরে পেতে ১৮ বছর ধরে আনসার ভিডিপির বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোনো সমাধান মেলেনি। শুধু তাই নয়, চাকরির প্রত্যাশায় দফায় দফায় আপিল-আবেদন করেও চাকরি ফিরে পাননি। 

ভুক্তভোগী আনসার সদস্য সফিউল ইসলামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুরে। ২০০৪ সালে রাঙ্গামটির কাপ্তাই শিলছড়িতে কর্মরত থাকাকালে টেপরেকর্ডারে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজানোর কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ বুধবার (২৫ মে) দুপুরে সুন্দরগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন সফিউল ইসলাম। 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, রাঙ্গামাটির শিলছড়ি কাপ্তাই ২৪ আনসার ব্যাটালিয়ন ক্যাম্পে অনেক সুনামের সঙ্গেই দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। কিন্তু একদিন টেপরেকর্ডারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ বাজানোর কারণে ওই ক্যাম্পের অধিনায়ক হিরা মিয়া তার প্রতি মারাত্মকভাবে রাগান্বিত হন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় অধিনায়ক তাকে চাকরিচ্যুত করারও হুমকি দেন।

এরপর হঠাৎ ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে মর্মে একটি চিঠি পান সফিউল। যার স্মারক নম্বর- অপাঃ/ব্যাটাঃ/৬৪০/অঅংগীঃ/২০০৪/২৩৬৩ আনস)।

পরে আনসার মহাপরিচালক বরাবর ১৯৯৫ সালের আনসার ব্যাটালিয়ন আইনের ১৬ ধারা মোতাবেক  আপিল করেন সফিউল। কিন্তু অদ্যবধি আপিলের কোনো জবাব দেয়নি কর্তৃপক্ষ। যদিও ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জে সংবাদ সম্মেলনের সূত্র ধরে আনসার সদরদপ্তর থেকে সফিউলের কাছ থেকে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেওয়া হয়। কিন্তু সদরদপ্তরের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেওয়ার পাঁচ মাস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। 

চাকরি ফিরে পেতে আনসার ভিডিপি কর্তৃপক্ষসহ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সফিউল। সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী জাহানারা বেগম উপস্থিত ছিলেন। 

রিপন আকন্দ/আরএআর