পটুয়াখালীতে বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশে হামলার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটনসহ বিএনপির অন্তত ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে পৌর শহরের বনানী বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

এর আগে সকাল ১০টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার বক্তব্য দেওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টি। 

তিনি বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ চলাকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রলীগ নেতা আরিফের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে আমাদের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। 

পটুয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম লিটন বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হামলা করেছে। এতে আমিও আহত হয়েছি। এছাড়া জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি রিমানুল ইসলাম রিমু (৪৮), মো. জাকির হোসেন (৪৫), তানভীর আহমেদ (১৯), মো. ফারুক আলম (৩৯), মো. হাসান (৩২), মো. আতিক (৩৫), জাহিদুর রহমান বাবু (৪৮), জাফর মুন্সি (৪৬), ফারুক মৃধা (৪০), মোকসেদ মৃধা (৩৫), মেহদি হাসান রাকিব (২৪), সৈয়দ শাহরিয়ার হোসেন শাহাদাৎসহ ২০ থেকে ২২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। ৫/৭ জনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোলাম সরোয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ এই দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। তারা চাইছে এ দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, বিরোধী দলীয় কোনো সমাবেশে হামলা হবে না। কিন্তু এ কথা সত্য নয়, তার প্রমাণ আজকে না শুধু বারবার পাচ্ছে এ দেশের মানুষ। আজকে পুলিশের সহায়তায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ আমাদের ওপর যেভাবে হামলা চালিয়েছে সেটি নজিরবিহীন।

তবে জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান আরিফ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা যে কটূক্তি করেছে, তার প্রতিবাদে আমরা সরকারি কলেজ এলাকা থেকে একটি মিছিল শুরু করি। মিছিলটি বনানী এলাকায় পৌঁছালে সেখানে ছাত্রদল-যুবদলের সন্ত্রাসীরা আমাদের মিছিলের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আমরা প্রতিবাদ করি। এখন তারা আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।

পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি হাসান সিকদার বলেন, বিএনপি অরাজকতার সৃষ্টি করতে চাচ্ছিল। ছাত্রদলের ছেলেরা অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের নির্দেশে ছাত্রলীগের ছেলেরা প্রতিহত করেছে শুধুমাত্র। পটুয়াখালীতে কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইলে প্রতিহত করা হবে বলে জানান তিনি।  

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শাকিল আহমেদ জানান, পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে। এছাড়া আরও কয়েকজনকে জরুরি বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা দুই পক্ষের মধ্যে ইট ছোড়াছুড়ি দেখে দুই পক্ষকেই সরিয়ে দেই। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সব সময় তৎপর আছে।

আরএআর