করোনার কারণে ২৬ মাস বন্ধ থাকার পর খুলনা-কলকাতা রুটে চালু হয়েছে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন। রোববার (২৯ মে)  সকালে ১৯ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতা থেকে ছেড়ে আসে ট্রেনটি। দুপুরে খুলনা থেকে ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে ট্রেনটি। দীর্ঘ দিন পর খুলনা-কলকাতা সরাসরি ট্রেন চলাচল করায় খুশি যাত্রীরা।

খুলনা রেলস্টেশনের মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, রোববার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ভারত থেকে ১৯ জন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসে বন্ধন এক্সপ্রেস। ট্রেনটি দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে খুলনা স্টেশনে এসে পৌঁছায়। কলকাতা থেকে ১৯ জন যাত্রী নিয়ে আসলেও খুলনা থেকে ৪৫ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়েছে ট্রেনটি। 

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ দিন বন্ধ ছিল ট্রেনটি। আজকের যাত্রায় যাত্রী কিছুটা কম রয়েছে। পরবর্তীতে যাত্রী আরও বাড়বে। প্রতি বৃহস্পতি ও রোববার দুই দিন খুলনা-কলকাতা রুটে ট্রেনটি চলাচল করবে।

ট্রেনের ভাড়া ও ভ্রমণ কর বিষয়ে তিনি বলেন, সব মিলিয়ে ট্রেনের এসি চেয়ার টিকিটের মূল্য ১ হাজার ৫৩৫ টাকা এবং কেবিনের ভাড়া ২ হাজার ২৫৫ টাকা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর কলকাতা-খুলনার মধ্যে ৪৫৬ আসনের ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ নামের আন্তর্জাতিক ট্রেনটি চলাচল শুরু হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ ট্রেনে কেবিনে সিট ভাড়া দেড় হাজার ও চেয়ার কোচ ভাড়া এক হাজার টাকা। সঙ্গে যোগ হয় ৫০০ টাকার ভ্রমণ কর।

বেনাপোল স্থলবন্দরে যাত্রীর পাসপোর্ট, ভিসাসহ ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর যাত্রীরা সরাসরি খুলনা ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াত করতে পারেন। ট্রেনটির ৪৫৬ আসনের মধ্যে ৩১২টি এসি চেয়ার ও ১৪৪টি প্রথম শ্রেণির আসন রয়েছে। কলকাতা-খুলনার মধ্যে দূরত্ব ১৭২ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশে পড়েছে ৯৫ কিলোমিটার ও ভারতে পড়েছে ৭৭ কিলোমিটার।

বন্ধন এক্সপ্রেস সকাল ৭টা ১০ মিনিটে কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে বেনাপোল স্টেশনে পৌঁছাবে। পরে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে পৌঁছাবে ১২টা ৩০ মিনিটে। খুলনা থেকে আবার যাত্রী নিয়ে দুপুর দেড়টায় রওনা দিয়ে বেনাপোল পৌঁছাবে বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে। পরে বেনাপোলে রেলওয়ে ইমিগ্রেশনে পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে রওনা দিয়ে কলকাতা পৌঁছাবে সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে।

খুলনা থেকে কলকাতার যাত্রী আসাদ শেখ বলেন, চিকিৎসার উদ্দেশে কলকাতা যাচ্ছি। সঙ্গে চার ভাইসহ বন্ধু রয়েছে। এসি চেয়ার সিটে জনপ্রতি ১ হাজার ৫৩৫ টাকা করে ভাড়া নিয়েছে।

অপর যাত্রী বিপ্লব বলেন, যাত্রাটা খুবই আনন্দের। কলকাতা যাওয়ার জন্য ট্রেন যাত্রা খুবই আরামদায়ক। 

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে খুলনা-কলকাতা রুটে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ চালু হয়। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনটি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

মোহাম্মদ মিলন/এসপি