সারা দেশের মতো পটুয়াখালীতেও অভিযান চালিয়ে অনিবন্ধিত ও নবায়নবিহীন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট ২১টি অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

রোববার (২৯ মে) দুপুরে পটুয়াখালী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার বালা নেতৃত্বে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে আরও ২৪টি অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সন্ধান পেয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সারা দেশের সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সময়ের পর নিবন্ধনহীন কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে পটুয়াখালী জেলায় শনিবার থেকে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় ১২৫টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে এর মধ্যে ৪৫টি প্রতিষ্ঠান অনিবন্ধিত। ইতোমধ্যে সদর উপজেলায় ৫টি, বাউফলে ৬টি, মির্জাগঞ্জে ৩টি, দশমিনায় ১টি, দুমকীতে ২টি ও গলাচিপায় ৪টিসহ মোট ২১টি অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাকিগুলো বন্ধ করার জন্য অভিযান পরিচালনা করছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

রোববার সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন এলাকায় তিনটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনাকালে দেখা যায়, অনিবন্ধিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো খোলা রেখেই পালিয়ে যান এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীরা। পরে দেখা যায় এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এক্স-রে রুমসহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা দিয়ে আসছিল তারা।

এ সময় অভিযান পরিচালনাকালে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার বালা, জেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মহিউদ্দিন আল মাসুদ, সিনিয়র ল্যাব টেকনোলজিস্ট রফিকুল ইসলামসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পটুয়াখালী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন কুমার বালা বলেন, সদর উপজেলার পাঁচটি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোনো কাগজপত্র নেই, এমন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের কাজীপাড়া এলাকার ফেমাস ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মুনসেফ পাড়া এলাকার, রয়েল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও বদরপুর ইউনিয়নের গ্রিন লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এই তিনটির অস্তিত্ব পাওয়ার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর বাকি দুটি সিটিজেন হেলথ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও এম এস ডায়াগনস্টিক সেন্টার অস্বিত্ব পাওয়া যায়নি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. এস এম কবির হাসান বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শনিবার সকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা সদরসহ ৮ উপজেলায় অভিযান চালানো হয়। জেলায় ১২৫টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে ৪৫ অনিবন্ধিত রয়েছে ইতিমধ্যে ২১টি বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকিগুলো বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে সফল করতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে।

এনএ