ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের সমাপনী শেষে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (৩০ মে) দুপুরে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা ডাকবাংলা চত্বরে এই হস্তান্তর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় যশোর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের এরিয়া কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোল্লা মো. কামরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানে সাইক্লোন আম্ফান। সাইক্লোন সিডরের পর এটি ছিল দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। 

১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ও ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতি সম্পন্ন এই সাইক্লোন দেশের ২৬টি জেলায় তাণ্ডব চালায়। প্রায় ২৬ লাখ মানুষ বাস্তহারা হয় এবং এই সাইক্লোনে ২৬ জন মানুষ মারা যায়। আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা ও সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলার ১১টি জায়গায় প্রায় ১০.৫৩ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় বাঁধের পুনর্নির্মাণকল্পে বাংলাদেশ সরকার দ্রুত বাঁধ মেরামত ও সংস্কারের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়। 

সম্মানিত সেনাবাহিনী প্রধানের দিক নির্দেশনায় ৫৫ পদাতিক ডিভিশন, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করে। মহামারি করোনার মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জনগণকে রক্ষায় এই পবিত্র দায়িত্ব চালিয়ে যায় এবং প্রকল্প সময় শেষ হবার আগেই কাজ শেষ করে।

শত ঝুকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণের কাজ শতভাগ সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করে।

অনুষ্ঠানে প্রকল্প পরিচালক ৩ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গাজী মাসুদ মো. মাহেনুর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী একেএম তাহমিদুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা চাকলা পয়েন্ট পরিদর্শন করেন।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে ৩০ এপ্রিল ২০২২ সালে শেষ হয়। নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ১শ ৪৫ কোটি টাকা।

মোহাম্মদ মিলন/আরআই