লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে স্কুল বন্ধ রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) সকাল থেকে রায়পুর পৌর শহরের মার্চেন্টস একাডেমি মাঠে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০ বছর পর আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে সকাল থেকে রায়পুর মার্চেন্টস একাডেমি মাঠে সম্মেলন স্থলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা এসে জড়ো হন। এতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রধান অতিথি থাকলেও তিনি আসেননি। তবে তিনি ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দিয়েছেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামাল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হারুনুর রশীদ।

এতে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন।

এদিকে স্কুল বন্ধ রেখে আওয়ামী লীগের সম্মেলন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাতজন অভিভাবক জানিয়েছেন, স্কুল বন্ধ রেখে রাজনৈতিক নেতারা তাদের সম্মেলন বাস্তবায়ন করছেন। করোনাকালে দীর্ঘ সময় বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এভাবে বিদ্যালয় বন্ধ রেখে একের পর এক রাজনৈতিক সভা-সম্মেলন শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তারা চাইলে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সম্মেলনটি করতে পারতেন। এ সম্মেলনকে ঘিরে এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয় মাঠে বিশাল প্যান্ডেল নির্মাণের সময় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় সমস্যা হয়েছে। 

রায়পুর মার্চেন্টস একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সম্মেলনের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান সম্ভব হতো না। বিদ্যালয় খোলা থাকলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব ছিল না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই সংরক্ষিত ছুটি থেকে বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত রয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রায়পুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। অন্য স্থানে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম করা যেত না। এজন্যই এখানে অনুমতি নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করেছি।

রায়পুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম সাইফুল হক বলেন, প্রধান শিক্ষক তার সংরক্ষিত ছুটি দিয়েছেন। বিদ্যালয় খোলা থাকলেও মাইকের শব্দের কারণে পাঠদান করা যেত না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতায় থাকতো। তবে এ ব্যাপারে আমাদের কাছ থেকে কেউ অনুমতি নেয়নি। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকেই এসব বিষয়ে অনুমতি নেওয়া হয়।

হাসান মাহমুদ শাকিল/আরএআর