নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ফেরার সময় বৈরী আবহাওয়ার কারণে আটকা পড়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। শুক্রবার (৩ জুন) দুপুর ১টায় জাহাজটি ভাসানচর থেকে রওনা হলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে এক ঘণ্টা পর পুনরায় ফেরত আসে।

ভাসানচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল হক ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুর ২টার দিকে নৌবাহিনীর জাহাজে ভাসানচর এসে পৌঁছান চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। শুক্রবার (৩ জুন) ভাসানচর ত্যাগ করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী দুপুর ১টায় জাহাজটি ভাসানচর থেকে রওনা হয়। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজটি এক ঘণ্টা পর পুনরায় ফেরত আসে।

ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (উপসচিব) মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পূর্বনির্ধারিত সিডিউল মোতাবেক চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং শুক্রবার (৩ জুন) ভাসানচর ত্যাগ করার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামীকাল সকালে তিনি ভাসানচর ত্যাগ করবেন। 

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বিভিন্ন বয়সের রোহিঙ্গা সদস্যদের সঙ্গে তাদের সুযোগ-সুবিধা, জীবনযাত্রার মানসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছেন এবং ভাসানচরের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের তুলনায় ভাসানচরে অনেক ভালো আছেন বলে রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ফলে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা এসে কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নেয়। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের চাপ সামলাতে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসমানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়।

এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ত্রয়োদশ ধাপে কক্সবাজার থেকে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ভাসানচরে পৌঁছেছে ২৯ হাজার ১১৬ জন রোহিঙ্গা। এ ছাড়া গত বছর মে মাসে সাগর পথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করা ৩০৬ রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়।

জানা গেছে, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর