রংপুরের পীরগাছায় থানায় স্ত্রী নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গিয়ে আটক হয়েছেন স্বামী মানিক মিয়া। তার আচরণে সন্দেহ হলে পুলিশ তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। আর এতেই বেরিয়ে আসে নিখোঁজ হওয়ার আড়ালে স্ত্রীকে হত্যা করে গর্তে পুঁতে রাখার ঘটনা। পরে ঘটনাস্থল থেকে নিখোঁজ মিলি আক্তারের (৩০) পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

উপজেলার পারুল ইউনিয়নের বিরাহিম কুটিয়ালপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। হত্যার তিন দিন পর শনিবার (৪ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামাই মানিক মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে থানায় জিডি করতে আসেন মিলির বাবা আশাদ আলী। এ সময় সন্দেহভাজন আচরণে পুলিশের জিজ্ঞাবাসাদে স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় মানিক মিয়াকে আটক করা হয়।

পীরগাছা থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুস শুকুর মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মানিক মিয়ার প্রথম স্ত্রী ছিলেন মিলি। তিনি স্থানীয় সৈয়দপুর বাজারের একটি হোটেলে কাজ করতেন। গত ১ জুন রাত ১১টার দিকে হোটেল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে মিলি নিখোঁজ হন। এরপর আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজ নিতে থাকে পরিবার। কিন্তু কোথাও মিলির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না।

এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে থানায় মিলির স্বামী মানিক মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে জিডি করতে আসেন মিলির বাবা আশাদ আলী। এরই মধ্যে মানিক মিয়ার বাড়ির পেছনের পুকুরের কাছের একটি গর্ত থেকে কুকুরকে মরদেহ টেনে বের করতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান চালানোর পর মানিককে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

এদিকে বৃহস্পতিবার (২ জুন) সকালে মানিকের মা রোকেয়া বেগম ও বড় ভাই তৌহিদ মিয়া এবং ভাবি লাকি বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি ছেড়ে চলে যান বলেও জানান স্থানীয়রা। নিহত মিলি আক্তার অভিযুক্ত মানিক মিয়ার প্রথম স্ত্রী। তাদের সংসারে ১৪ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

আব্দুস শুকুর মিয়া আরও বলেন, নিখোঁজের তিন দিন পর পুঁতে রাখা অবস্থায় ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য রমেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় মানিক মিয়াকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খুঁজছি। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর