নাম তার সোহেল আহমেদ। তার এক চোখ ও পুরো মাথায় ব্যান্ডেজ লাগানো। হাতের চামড়া খসে পড়েছে। বার্ন ইউনিটে কাতরাচ্ছিলেন। তিনি সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হয়েছেন।

শনিবার রাত ৯টায় অগ্নিকাণ্ড শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৯৩ জনকে ভর্তি করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে। এদের মধ্যে একজন সোহেল আহমেদ।

ওয়ার্ডের প্রবেশ পথের ডান পাশের বেডে শুয়ে আছেন মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ নামে একজন। পেটের অর্ধেক অংশ ঝলসে গেছে তার। ব্যান্ডেজ লাগানো পুরো পেটে। পাশে দাঁড়িয়ে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন তার মামাতো ভাই রাসেল। 

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাইফুল্লাহ ভাই ওখানে ৬ বছর ধরে কাজ করছেন। তিনি স্টোরকিপার হিসেবে কাজ করেন। গতকালের ঘটনা জানার পরপরই তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করি। কিন্তু পারিনি। পরে মেডিকেলে এসে অনেক খোঁজাখুঁজির পর পেলাম। ভালো করে কথা বলতে পারছেন না। পরিস্থিতি কেমন সেটাও এখন ভালো করে বলা যাচ্ছে না। 

তাহের উদ্দিন নামে এক স্বজন দাঁড়িয়ে আছেন ওয়ার্ডের পাশে। তার চাচাতো ভাই রফিক উদ্দিনের দুই হাত ও মাথায় ব্যান্ডেজ লাগানো। দুই পায়ের আঙুল পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, ভাইয়ের ফেসবুকে আগুনের ঘটনা জানতে পারি। এরপর ভাইকে ফোন দিয়ে না পেয়ে সীতাকুণ্ডে চলে আসি। সেখানে না পেয়ে মেডিকেল এসে জানতে পারি তিনি ৩৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। এরপর বাড়িতে খবর জানাই।

মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে দায়িত্বরত নার্স সোমা দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন পর্যন্ত ৯৩ জনের তালিকা আমার কাছে আছে। সবাই কমবেশি আঘাতপ্রাপ্ত। তাদের সেবা চলছে। একসঙ্গে এত দগ্ধ রোগী আর কখনো দেখিনি আমি।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত এবং ২ শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেলসহ আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় তাদের কারও মাথায় আঘাত লেগেছে, কারও আবার দুই হাতই ঝলসে গেছে। একজনের পেটের এক পাশ ভেতরে ঢুকে গেছে। আহত ব্যক্তিদের আর্তনাদ আর স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে মেডিকেলের বার্ন ইউনিট। 

আরএইচ/এসপি