‘ভাই আগে খান, না হয় ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। রাত জেগে উদ্ধারকাজ করে যাচ্ছেন, একটুও যদি না খান, শক্তি পাবেন না। আপনারা আমাদের শেষ ভরসা; আপনারা যদি ক্লান্ত হয়ে পড়েন, তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে।’

সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে থাকা দমকল কর্মীদের উদ্দেশ্যে কথাগুলো বলছিলেন এজন স্বেচ্ছাসেবী। দমকলকর্মীদের খাবার ও পানি বিতরণ করে যাচ্ছেন রাশেদুল ইসলাম (২৬) নামে চট্টগ্রামের একটি সংগঠনের ওই কর্মী।

রোববার (৫ জুন) বিকেল ৫টা নাগাদ প্রায় ২০ ঘণ্টা পরও ঘটনাস্থলে জ্বলছে আগুন। আগুন নেভানো এবং হতাহতদের উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী। একটানা কাজ করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে এগিয়ে এসেছে অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

এদিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মী রয়েছেন ৯ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৯টি ইউনিট, সেনাবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশসহ বিশেষ টিম কাজ করছে। আগুন ডিপো এলাকায় সীমাবদ্ধ রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

এ অগ্নিকাণ্ডে পুলিশের ১০ সদস্যসহ ৪ শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি নাশকতা কি না, প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেছেন ডিপো পরিচালক।

অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে বন্দর কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিমকে।

ডিপোতে ভয়াবহ আগুনের ঘটনার পেছনে মনিটরিং টিমের অবহেলা ছিল বলে প্রাথমিক ধারণার কথা জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে। আজকের মধ্যেই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন তিনি।

সাইদুল ইসলাম ফরহাদ/এনএ