হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে স্বামীর হাত-পা বেঁধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের দায়ে মনু মিয়া (৩৬) নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছেন হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সুদীপ্ত রায়। 

সোমবার (৬ জুন) দুপুরে আসামির অনুপস্থিতিতে তিনি এই রায় প্রদান করেন। মনু মিয়া বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের মৃত ইয়াছিন উল্লার ছেলে।
 
আদালত সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামে এক গৃহবধূকে মনু মিয়া প্রায়ই উত্যক্ত করতেন। ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি দুপুরে গৃহবধূর দিনমজুর স্বামী বাড়িতে না থাকায় মনু মিয়া ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে ভিকটিমের স্বামী-সন্তানকে উঠিয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যান মনু মিয়া।
 
পরে গৃহবধূর স্বামী বাড়িতে আসলে সবকিছু জানালে তিনি সাক্ষী ও গ্রাম পুলিশকে নিয়ে মনু মিয়াকে আটক করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে মনু মিয়ার লোকজন এসে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
 
পরে ১৭ জানুয়ারি গভীর রাতে মনু মিয়া ভিকটিমের ঘরে সিঁধ কেটে প্রবেশ করে ভিকটিমের স্বামীকে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে আবারও গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় গৃহবধু নিজে বাদী হয়ে ১৯ জানুয়ারি বানিয়াচং থানায় মনু মিয়া, উস্তার মিয়া, আব্দুল জলিল, ইদ্রিছ মিয়া ও মুতি মিয়াকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
 
বানিয়াচং থানার উপ-পরিদর্শক মুজিবুর রহমান ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল মনু মিয়া ও উস্তার মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করলে আদালত ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সোমবার পলাতক মনু মিয়াকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করেন। অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের বেখসুর খালাস দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (স্পেশাল সিপি) অ্যাডভোকেট আবুল হাসিম মোল্লা মাসুম জানান, এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ আনন্দিত। এর মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অপরাধীরা ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ করতে আর সাহস পাবে না।

আরআই